আন্তর্জাতিক ডেস্ক

চলমান উত্তেজনার মধ্যেই আবারো গাজায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। এর ফলে সেখানে নতুন করে সহিংসতা বৃদ্ধির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এর আগে গত সপ্তাহে অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিনে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বিমান হামলা চালিয়েছিল। সেই ঘটনায় উপত্যকাজুড়ে চলমান শোকাবহ পরিস্থিতির মাঝে বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে নতুন করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল।
এর আগে, জেনিন শরনার্থী শিবিরে সামরিক অভিযান চালিয়ে ৯ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে ইসরায়েলি বাহিনী। এর জেরে ফিলিস্তিনি এক যুবকের বন্দুক হামলায় সাত ইসরায়েলি নিহত হয়। এর পর থেকেই সেখানে ধরপাকড় শুরু করেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। অভিযুক্ত যুবকের পরিবার ও বন্ধুসহ ৪২ জনকে গ্রেপ্তার করে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনিদের গুলি করার অনুমতি দিচ্ছে, ইসরায়েলি নাগরিকদের বন্দুকের লাইসেন্স দেওয়া এবং সেসব বন্দুক সঙ্গে রাখার নির্দেশ দিয়েছে নেতানিয়াহু সরকার।
চলমান এমন অস্থিরতার কারণে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী এবং ফিলিস্তিনি সশস্ত্র বিভিন্ন গোষ্ঠীর মাঝে গোলাগুলির ঘটনাও ঘটেছে। এর মাঝে বুধবার রাতে অবরুদ্ধ এই উপত্যকা থেকে ইসরায়েলে রকেট নিক্ষেপ করা হয়। যদিও এখন পর্যন্ত কোনও গোষ্ঠী এই রকেট হামলার দায় স্বীকার করেনি।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, গাজার ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠী হামাসের রকেট এবং অস্ত্র উৎপাদন স্থাপনায় বিমান হামলা চালানো হয়েছে। ইসরায়েলি অভিযানের পর ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি গাজা থেকে নতুন করে রকেট নিক্ষেপ এবং বিস্ফোরণের খবর দিয়েছে। রকেট হামলায় সেখানকার বিভিন্ন ভবন কেঁপে ওঠে এবং রাতের আকাশে আলো দেখা যায় বলে জানিয়েছে এই বার্তা সংস্থা। এ সময় ইসরায়েলি ভূখণ্ডে বিমান হামলার সাইরেন বেজে ওঠে। তবে এতে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে কিনা, তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি।
এদিকে, ফিলিস্তিনের বামপন্থী দল ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইনের সশস্ত্র শাখা বলেছে, ইসরায়েলি কারাগারে ফিলিস্তিনি বন্দীদের ওপর পরিকল্পিত আগ্রাসন এবং ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে বিমান হামলার জবাবে বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে ইসরায়েলে রকেট নিক্ষেপ করেছে তারা।
বুধবারের রকেট হামলার পর ইসরায়েলের উগ্র ডানপন্থী জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ও কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক ইতামার বেন-গাভির এক টুইট বার্তায় বলেছেন, তিনি ফিলিস্তিনি বন্দীদের বিষয়ে শর্ত কঠোর করার পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হবেন।
ইসরায়েল গত এক বছরের প্রায় প্রত্যেক দিনই পশ্চিম তীরে সামরিক অভিযান পরিচালনা করেছে। গত বছরের শেষের দিকে ইসরায়েলে নতুন উগ্র ডানপন্থী সরকার ক্ষমতায় আসার পর ফিলিস্তিনিদের জন্য চলতি বছরের জানুয়ারি ভয়াবহ এক রক্তাক্ত মাস ছিল। এই এক মাসে ইসরায়েলের অভিযানে অন্তত ৩৫ ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছেন।