অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাস

ফিলিস্তিনের গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে সোমবার (২৫ মার্চ) জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে প্রথমবারের মতো একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ভোট না দেওয়ায় নিরাপত্তা পরিষদের ১৪ সদস্যের ভোটে প্রস্তাবটি পাস হয়। এর আগে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র তিনবার ভেটো দিয়েছিল। এই প্রথমবার এ ধরনের প্রস্তাবে তারা ভেটো প্রদানে বিরত থাকল। খবর আল জাজিরা।

নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাসের হাতে বন্দী সবাইকে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তিরও আহ্বান জানানো হয়। যুক্তরাষ্ট্র এ প্রস্তাবেও ভোট দানে বিরত থাকলেও এ প্রস্তাব পাস করার ক্ষেত্রে বিলম্বের জন্য হামাসকে দায়ী করেন।

জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে নিজেদের অবস্থানের ব্যাখ্যা করে বলেন, আমরা এই প্রস্তাবের সবকিছুর সঙ্গে একমত হইনি। কারণ আমরা হামাসের নিন্দার বিষয়টি জানিয়েছিলাম। কিন্তু এটিসহ নির্দিষ্ট কিছু সংশোধনী প্রস্তাব উপেক্ষা করা হয়েছে। জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হলে গাজায় মানবিক ত্রাণ সরবরাহ বাড়বে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

প্রায় ছয় মাস ধরে চলা এই সংঘাতে গাজায় মানবিক পরিস্থিতি চরম সংকটজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। জাতিসংঘের মতেই, গাজা উপত্যকার ২৩ লক্ষ বাসিন্দার ৯০ শতাংশেরও বেশি এখন বাস্তচ্যুত। এছাড়া সর্বাত্মক ইসরায়েলি অবরোধ ও ক্রমাগত বোমাবর্ষণে উপত্যকাজুড়ে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৩২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৭২ হাজারের বেশি। উভয় ক্ষেত্রেই নারী ও শিশুরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এ অবস্থায় এ সংঘাতের অবসান ঘটাতে বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও আহ্বান জানিয়ে আসছিল। পাঁচ মাস ধরে নানা নাটকীয়তার অবশেষে সোমবার যুদ্ধবিরতির এই প্রস্তাব পাস হলো।

নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাস আসলে কতটা কার্যকরী এমন প্রশ্নে আল জাজিরার কূটনৈতিক সম্পাদক জেমস বেজ জানান, এটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ একটি অগ্রগতি। অতীতে যুক্তরাষ্ট্র তিনবার ভেটো দিলেও এবার ভোটদানে বিরত থেকে প্রস্তাবটি পাসের সুযোগ দিয়েছে।

জেমস বেজ আরও বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব হলো এক ধরনের আন্তর্জাতিক আইন। জাতিসংঘের সব সদস্য রাষ্ট্রই তা মেনে চলতে বাধ্য।