পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন দেশের সব রাজনৈতিক দলকে আগামী সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এটি একটি অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ এবং বিশ্বাসযোগ্যভাবে অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি আসন্ন নির্বাচন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ এবং বিশ্বাসযোগ্যভাবে অনুষ্ঠিত হবে … আমরা সব বিরোধী রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানাই, কারণ তাদের সকলের জন্য সমতল ক্ষেত্র থাকবে।’
আজ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ গ্রোথ স্টোরি : হোয়াটস দ্য ফিউচার রোড ম্যাপ’ শীর্ষক সেশনে সিএনএন অ্যাঙ্কর ও বিজনেস এডিটর এট লার্জ রিচার্ড কোয়েস্টের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
নির্বাচন নিয়ে সরকারের অবস্থান সংক্রান্ত কোয়েস্টের প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, বর্তমান সরকার গত ১৪ বছরে এ ক্ষেত্রে চমৎকার কাজ করেছে, কারণ এই সময়ে এক হাজারের বেশি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্যভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি বলেন, ভুয়া ভোটার তালিকা থাকলেও পরবর্তীতে ভোটার আইডি কার্ড চালু করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে স্বচ্ছভাবে গড়ে তোলার মতো নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ কর্তৃত্বে স্বাধীন করা হয়েছে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’-এর মতো একের পর এক ধারণা দিচ্ছে।
এদিকে বাণিজ্যমন্ত্রীও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতিধ্বনি করে বলেন, সরকার আগামী সাধারণ নির্বাচনে যেতে প্রস্তুত।
সরকার আগামী দিনে চীনা ঋণের ফাঁদে পড়বে কিনা জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নেতিবাচক জবাব দেন। তিনি বলেন,‘কিছু মানুষের মধ্যে একটা ধারণা আছে, বাংলাদেশ চীনের ঋণের ফাঁদে পড়বে। কিন্তু, এ ধরনের ফাঁদে পা দেওয়ার কোনো উপায় নেই।’
তিনি বলেন, চীন একটি বন্ধুপ্রতীম দেশ এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী।
‘আমরা বেশ ভালো অবস্থায় আছি। সুতরাং, চিন্তার কিছু নেই’- উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশও জাপানের কাছ থেকে সহযোগিতা নিচ্ছে এবং এ নিয়ে কোনো কথা নেই।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির মূলমন্ত্র হলো ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরীতা নয়।’
তিনি বলেন, সরকার এই সময়ে জোট নিরপেক্ষ নীতি অনুসরণ করছে। সরকার আঞ্চলিক অখন্ডতা, মানবিক সহায়তা এবং যুদ্ধের অবসান সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলিকে সমর্থন করেছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, ‘অবশ্যই আমরা যুদ্ধের নিন্দা করি, কারণ আমরা একটি শান্তিপ্রিয় দেশ। আমরা জাতিসংঘে এক নম্বর সৈন্য প্রেরণকারী দেশ। আমরা টেকসই শান্তি চাই এবং তাই আমরা প্রতিবেশীদের মধ্যে এই ধরনের দর্শনের প্রচার করছি… শান্তির সংস্কৃতি, প্রতিবেশীদের মধ্যে টেকসই শান্তি।’
অন্যদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একদিন এক ভিন্ন দেশ হবে, এটি উৎপাদনের কেন্দ্রস্থলও হয়ে উঠবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন একটি গতিশীল অর্থনীতির দেশ এবং অনেক দেশ তাদের পণ্য বাংলাদেশে রপ্তানি করে, যদিও স্বাধীনতার পর পরিস্থিতি এরকম ছিল না।
মোমেন অবশ্য উল্লেখ করেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন, মহামারী এবং যুদ্ধের প্রভাব দেশটিতে এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ।
তিনি আরও বলেন, ‘তবে, আমরা জানি কিভাবে পরিচালনা করতে হয়… উন্নয়ন অংশীদারদের সহায়তায় আমরা আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।’