ইবিতে ছাত্রলীগ নেত্রীর বিরুদ্ধে নবীন শিক্ষার্থীকে বিবস্ত্র করার অভিযোগ 

পয়গাম ডেস্ক :

কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরার বিরুদ্ধে নবীন এক শিক্ষার্থীকে র‍্যাগিংয়ে বিবস্ত্র করার অভিযোগ উঠেছে। আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রক্টর বরাবর এ অভিযোগ করেন ওই শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় হল প্রশাসন চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। 

এর আগে গত রোববার রাত সাড়ে ১১টা থেকে ৩ ঘণ্টা পর্যন্ত তাঁর ওপর র‍্যাগিং করা হয় বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী। 

তবে বিষয়টি অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। ওই মেয়ে মিথ্যা বলছে। হয়তো একটি কুচক্রী মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত শনি ও রোববার দুই দফায় দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের আবাসিক ছাত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরার নেতৃত্বে ৭-৮ জন ছাত্রী ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে। পরে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করা হয়। প্রথম দফায় শনিবার রাতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয় এবং হল থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। 

পরে দিন রোববার বিকেলে হল প্রভোস্ট এবং সহকারী প্রক্টরের হস্তক্ষেপে বিষয়টির মীমাংসা করা হয়। কিন্তু ওই দিন দিবাগত রাত আনুমানিক ১১টার দিকে আবারও চলে নির্যাতন। 

অভিযুক্তরা নির্যাতনের সময় বলেন, ‘চিনিস আমাদের, আমরা কত খারাপ! আমরা তোর কী করতে পারি জানিস তুই? কোন আইডিয়া আছে আমাদের সম্পর্কে। তুই যদি প্রশাসনের কাছে কোনো অভিযোগ দিস, তাহলে তোকে মেরে কুত্তা দিয়ে ঘাওয়াব।’ 

পরদিন সোমবার জীবন বাঁচাতে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী হল থেকে গ্রামের বাড়িতে চলে যায়। সকালে তাঁকে হলে না পেয়ে ছাত্রলীগ নেত্রী অন্তরাসহ অন্যরা একাধিকবার ফোন দেন। 

ঘটনার সূত্রপাত গত ৯ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বিভাগের নবীন বরণ ছিল। সেখানে তাবাসসুম নামে বিভাগের ইমিডিয়েট এক সিনিয়র জানতে চান কোনো নবীন শিক্ষার্থী শেখ হাসিনা হলে উঠেছে কিনা। 

তখন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, তিনি এলাকার পরিচিত এক আপুর রুমে গেস্ট হিসেবে উঠেছেন। পরে তাবাসসুম তাকে তার রুমে এসে দেখা করতে বলেন। কিন্তু ওই শিক্ষার্থী তাঁর রুমে সময়মতো যাননি। এরপরই নেমে আসে ওই শিক্ষার্থীর ওপর অমানুষিক নির্যাতন। 

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। বিষয়টি খোঁজখবর নেওয়া হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামসুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রথম বর্ষের এক মেয়ে কিছু সিনিয়রদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে বলে অভিযোগ করেছিল কিছু ছাত্রী। পরে আমি ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা মিলে বিষয়টি মিটমাট করে দেই। কিন্তু পরে তার সঙ্গে কি হয়েছে এ বিষয়ে কেউ কিছু জানায়নি।

ড. শামসুল আলম আরও বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা হল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি খতিয়ে দেখে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি জেনেছি। উভয়-পক্ষের কথা শুনে বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।