ইরাক ও সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলা 

ইরাক ও সিরিয়ায় থাকা ইরানের বিভিন্ন স্থাপনায় বিমান হামলা চালাতে শুরু করেছে মার্কিন সামরিক বাহিনী। সম্প্রতি সিরিয়ার সীমান্তের কাছে জর্ডানে মার্কিন একটি সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় প্রতিক্রিয়ায় শুক্রবার থেকে এ হামলা চালানো শুরু হয়। তবে এসব হামলায় তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। খবর আল-জাজিরা ও বিবিসি।

যুক্তরাষ্ট্র সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানায়, মার্কিন সামরিক বাহিনী ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানের ইসলামিক রেভলুশনারি গার্ড কুদস বাহিনী এবং তাদের সম্পৃক্ত মিলিশিয়া বাহিনীর ৮৫টি বেশি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। এসব লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে রয়েছে মিলিশিয়া বাহিনীর পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ সেন্টার, গোয়েন্দা কেন্দ্র, রকেট, ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের গুদাম, রসদ এবং গোলাবারুদ সরবরাহ ব্যবস্থা। হামলায় মার্কিন বিমানবাহিনীর বি-১ বোমারু বিমানসহ অন্যান্য বিমান অংশ নেয়।

গত রোববার জর্ডানে মার্কিন একটি সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় তিনজন মার্কিন সেনা নিহত হন, আহত হন ৪১ জন। ওয়াশিংটন এ হামলার জন্য ইরান-সমর্থিত একটি সশস্ত্র গ্রুপকে দায়ী করে সিরিয়া ও ইরাকে অবস্থিত ইরানের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালানোর পরিকল্পনায় অনুমোদন দেয়।

সিরিয়া ও ইরাকে অবস্থান করা ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) এলিট বাহিনী কুদস ফোর্স এবং তাদের সমর্থিত বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর সাতটি স্থাপনায় আধাঘণ্টা ধরে হামলা চালানো হয়। এর মধ্যে সিরিয়ার চারটি এবং ইরাকের তিনটি স্থাপনা ছিল। হামলাটি সফল হয়েছে বলে দাবি করেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।

ইরাক ও সিরিয়ায় হামলা নিয়ে মার্কিন জেনারেল ডগলাস সিমস সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গত কয়েক দিন ধরে আবহাওয়াজনিত কারণে বিমান হামলা চালানো কঠিন ছিল। তবে শুক্রবার আবহাওয়া অনুকূলে এলে ইরানের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট এসব লক্ষ্যে হামলা চালানো হয়।

এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকেলে এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট বাইডেন জানান, মার্কিন বাহিনী ইরাক ও সিরিয়ায় আইআরজিসি ও তাদের সহযোগী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। এসব স্থাপনা থেকে মার্কিন বাহিনীকে আক্রমণ করা হতো। আমাদের জবাব দেওয়া শুরু হয়েছে, আমাদের পছন্দমতো সময়ে এবং পছন্দমতো জায়গায় এ হামলা চলতে থাকবে।

বাইডেন আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্য বা বিশ্বের কোথাও কোনো সংঘাত চায় না। তবে যারা আমাদের ক্ষতি করতে চায় তাদের জানা থাকা দরকার, আপনি যদি একজন আমেরিকান নাগরিকেরও ক্ষতি করেন তবে আমরা এর জবাব দেবো।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেছিলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্র, আমাদের সামরিক বাহিনী এবং আমাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সব কিছু রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেব।

এদিকে মার্কিন বিমান হামলার তীব্র সমালোচনা করেছে ইরাক। দেশটির সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ইয়াহইয়া রসুল সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে বলেন, এর ফলে বাগদাদ ও ওয়াশিংটন মধ্যকার সম্পর্কে টানাপড়েন দেখা দিতে পারে। তবে যুক্তরাষ্ট্র দাবি করছে, বাগদাদকে জানিয়েই দেশটির বিভিন্ন স্থানে হামলা চালানো হয়েছে।