ইরানে কাশেম সোলাইমানির মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বোমা হামলা, নিহত শতাধিক

ইরানের প্রয়াত সেনা কর্মকর্তা জেনারেল কাশেম সোলাইমানির মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ভয়াবহ বোমা হামলা হয়েছে। দফায় দফায় চালানো এই হামলায় প্রাণ গেছে অন্তত শতাধিক মানুষের। আহত হয়েছে অনেকে। যাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন।

বুধবার (৩ জানুয়ারি) দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় কেরমান শহরে কাশেম সোলাইমানির সমাধিস্থলের পাশের এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিস্ফোরণের একাধিক ভিডিওতে বেশ কিছু মরদেহ রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।

কর্তৃপক্ষ জানায়, বুধবার ছিল আলোচিত এই সেনা কর্মকর্তার চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষ্যে ইরানের কেরমান প্রদেশে সোলাইমানির মাজারে বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে যোগ দেন হাজার হাজার মানুষ।বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার কাসেম সোলাইমানির চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শত শত মানুষ হেটে হেটে তার সমাধিস্থলের দিকে যাচ্ছিল। এ সময় হঠাৎ করেই বিকট শব্দে একটি বোমা বিস্ফোরিত হয়।

এর কিছুক্ষণ পর বিস্ফোরিত হয় আরও একটি বোমা। ঘটনাস্থলেই প্রাণ যায় অন্তত ২০ জনের। হাসপাতালে নেয়ার পর মৃত্যু হয় বাকিদের। প্রাথমিক তদন্তে কর্তৃপক্ষ বলছে, রিমোট নিয়ন্ত্রিত বোমার মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। এদিকে কেরমানের ডেপুটি গভর্নর বিস্ফোরণের এই ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে অভিহিত করেছেন। ইরানের আরেক বার্তা সংস্থা তাসনিম নিউজ এজেন্সি বলছে, জেনারেল কাশেম সোলাইমানির সমাধিস্থল থেকে ৭০০ মিটার দূরে প্রথম বিস্ফোরণ ঘটেছে।

এরপর দ্বিতীয় বিস্ফোরণ ঘটেছে সমাধিস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে। বিস্ফোরণ স্থানের ভিডিও ফুটেজের সাথে তাসনিমের এই তথ্যের মিল আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ ভিডিওতে দেখা যায়, বিস্ফোরণে কাশেম সোলাইমানির সমাধিস্থল ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। তবে কারা, কেন এ হামলা করেছে এখনো তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কোনো সংগঠনও এখন পর্যন্ত এ হামলার দায় স্বীকার করেনি।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি ইরাকের বাগদাদ বিমানবন্দরে মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন কাশেম সোলাইমানি। তাকে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির পর দেশটির ‘সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি’ বলে মনে করা হতো।