ইসরায়েলকে আরও অস্ত্র দিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউজ কংগ্রেসকে জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলে ১০০ কোটি ডলারের বেশি অস্ত্র পাঠাতে চায়। সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েল গাজার রাফা শহরে হামলা অব্যাহত রাখায় আন্তর্জাতিক চাপ থাকার পরেও দেশটিকে অস্ত্র দিয়ে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর বিবিসির।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, নতুন এই প্যাকেজের মধ্যে ট্যাঙ্ক রাউন্ড, মর্টার এবং কৌশলগত সাঁজোয়া যান অন্তর্ভুক্ত থাকবে। যুক্তরাষ্ট্রে বিবিসির অংশীদার সিবিএস নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কংগ্রেসের এক সদস্য। তবে এক্ষেত্রে আইন প্রণেতাদের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।
গত সপ্তাহেই প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছিলেন যে, ইসরায়েল যদি রাফায় বড় ধরনের আক্রমণ চালায় তবে তিনি দেশটিতে অস্ত্রের চালান বন্ধ করে দেবেন। অথচ এক সপ্তাহের ব্যবধানেই ভোল পাল্টে ফেললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এর আগে রাফা শহরে ইসরায়েল বড় ধরনের হামলা চালাতে প্রস্তুত এমন উদ্বেগ থেকে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলে বোমার একটি চালান বন্ধ করে দেয়। সে সময় ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বাইডেন বলেন, যদি তারা রাফায় হামলা চালায় তবে আমি তাদের অস্ত্র সরবরাহ করবো না। রাফায় হামলা চালানোর জন্য যেসব অস্ত্র এবং কামানের গোলা ব্যবহার করা হয়েছে তা সরবরাহ করব না।
এছাড়া আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের প্রতি নিজেদের বাধ্যবাধকতার সঙ্গে ‘অসঙ্গতিপূর্ণ’ কর্মকাণ্ডে ইসরায়েল হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা অস্ত্র ব্যবহার করেছে। এমনটা মনে করার মতো যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে বলে সম্প্রতি জানিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। অবশ্য তবুও ইসরায়েলের কথা অবিশ্বাস করছে না তারা।
মার্কিন প্রশাসন বলেছে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া অস্ত্র ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের যে অভিযোগ উঠেছে, তা যাচাই করার মতো পূর্ণাঙ্গ তথ্য তাদের কাছে নেই। এ কারণে, আইন মেনেই মার্কিন অস্ত্র ব্যবহার করা হবে, ইসরায়েলের এই আশ্বাসকে বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র।
বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ফেব্রুয়ারিতে একটি নতুন জাতীয় নিরাপত্তা মেমোরেন্ডাম (এনএসএম) ইস্যু করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেটি অনুসারে, মার্কিন অস্ত্র ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের আইন বা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন হচ্ছে না, ইসরায়েলের এমন আশ্বাস বিশ্বাসযোগ্য কি না তা জানাতে বলা হয়েছিল মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকে।
মঙ্গলবার, ইসরায়েলি ট্যাঙ্কগুলো গাজান শহরের দক্ষিণ-পূর্বের আবাসিক এলাকার আরও ভেতরে অগ্রসর হতে দেখা গেছে। রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন স্থানীয় ফিলিস্তিনিরা।
গত মাসে ইসরায়েল, ইউক্রেন এবং তাইওয়ানকে সহায়তার জন্য ৯৫ বিলিয়ন ডলার সহায়তার অনুমোদন দেয় মার্কিন কংগ্রেস। চলতি বছরের নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ করার বিষয়টি বাইডেন প্রশাসনের জন্য একটি রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই। সে কারণেই ইসরায়েলকে একের পর এক অস্ত্রের চালান সরবরাহ করা হচ্ছে।