ইসরায়েলকে জাতিসংঘের নারী-অধিকার কমিশন থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন বিশ্বের দুই হাজারেরও বেশি মনোবিজ্ঞানী। এই কমিশনের সচিব ও জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছে লেখা এক চিঠিতে তারা এই দাবি জানিয়েছেন।
তারা ওই চিঠিতে গাজার শিশু ও নারীদের মানসিক সুরক্ষার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর উদাসীনতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এছাড়াও গাজায় ইসরায়েলের পাশবিক অপরাধযজ্ঞের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
চিঠিতে তারা লিখেছেন, আজ বিশ্বের মনোবিজ্ঞানীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো এটা যে জাতিসংঘের নারী-অধিকার বিষয়ক কমিশন কী কেবলই কয়েকটি হাতে গোনা দেশের জন্য এবং ফিলিস্তিনের নারী ও শিশুদের কোনো স্থান কি এ সংস্থায় নেই? জাতিসংঘের নারী-অধিকার কমিশনের সম্মানিত সদস্যরা কি এ পর্যন্ত সেইসব নারী ও শিশুদের মানসিক সুরক্ষা বা নিরাপত্তার বিষয়টি ভেবে দেখেছেন যারা বোমা, গুলি ও গোলার শব্দ শুনে তাদের দিন শুরু করেন?
ইসরায়েল নৃশংস আগ্রাসন চালানো সত্ত্বেও এখনও কীভাবে এই কমিশনের সদস্য-পদে বহাল রয়েছে এবং ইসরায়েলের হাত ২৫ হাজারেরও বিশ নিরপরাধ নারী ও শিশুর রক্তে রঞ্জিত হওয়া সত্ত্বেও তেল-আবিবের শাসকগোষ্ঠী কোন্ মুখে নারী ও শিশুদের অধিকার নিয়ে কথা বলে? প্রশ্ন তোলেন মনোবিজ্ঞানীরা।
আরও প্রশ্ন করা হয়, অবৈধ ইসরায়েল নারী-অধিকারের কথা বলে অথচ গাজার যুদ্ধে নিহতদের প্রায় ৭০ শতাংশই হল নিরপরাধ নারী ও শিশু! একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা হিসেবে জাতিসংঘের চোখ ও কানগুলো কি এইসব লোমহর্ষক নৃশংস অপরাধযজ্ঞের বিষয়ে বন্ধ হয়ে আছে?
বিশ্বের এই মনোবিজ্ঞানীরা জাতিসংঘের বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুণ্ণ হওয়াসহ ইসরায়েলি অপরাধযজ্ঞের প্রতি উদাসীনতার নানা পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে যত শিগগিরই সম্ভব এই জঘন্য ও ভুয়া সরকারকে এই সংস্থার সব তহবিল বা ফান্ড থেকে ও সর্ব-নিম্ন প্রতিক্রিয়া হিসেবে নারী অধিকার কমিশন এবং শিশু-অধিকার কনভেনশন থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরের মজলুম ও প্রতিরক্ষাহীন ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর নতুন করে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ শুরু করে দখলদার ইসরায়েল।
এ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রায় সাড়ে ৩২ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত ও ৭৪ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছে।
অবরুদ্ধ গাজার বেশ কয়েকজন নারীকেও সম্প্রতি ধর্ষণ করেছে ইসরায়েলি সেনারা। অনুরূপ নানা ঘটনা ঘটেছে পশ্চিম তীরেও। ইসরায়েলি কারাগারে বন্দী অনেক ফিলিস্তিনি নারীও ইসরায়েলি সেনাদের যৌন-সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এমনকি ১০-১১ বছরের ফিলিস্তিনি কন্যা-শিশুও ইসরায়েলি সেনাদের যৌন-পাশবিকতায় মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে।
সূত্র- পার্সটুডে