ইসরায়েলে কারা হেফাজতে ফিলিস্তিনি লেখক ওয়ালিদ দাক্কার মৃত্যু

ইসরায়েলে কারাগারে বন্দী অবস্থায় মারা গেছেন ফিলিস্তিনি লেখক ও অধিকারকর্মী ওয়ালিদ দাক্কা (৬২)। ইসরায়েলের শামির মেডিকেল সেন্টারে তার মৃত্যু হয়। গত রোববার (৭ এপ্রিল) ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ইসরায়েল টুডে এক খবরে তার মৃত্যুর কথা জানায়। খবর আল জাজিরা।

প্যালেস্টিনিয়ান কমিশন অব ডিটেইনিস অ্যান্ড এক্স-ডিটেইনিস অ্যাফেয়ার্স দাবি করেছে, ৩৮ বছর ধরে ইসরায়েলি কারাগারে আটক থাকা দাক্কা ক্যান্সারে ভুগছিলেন। ‘ধীরে ধীরে হত্যা’ নীতি প্রয়োগ করে দাক্কাকে হত্যা করা হয়েছে। ইসরায়েলি কারা কর্তৃপক্ষ তাদের কাছে আটক থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর এ পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে।

ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ওয়াফা এক প্রতিবেদনে দাক্কাকে ‘মুক্তিযোদ্ধা’ বলে উল্লেখ করেছে। ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের কারাগারে কীভাবে দাক্কার মৃত্যু হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

তবে ইসরায়েলি কারাগার-সংক্রান্ত বিষয়গুলোর দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী দেশটির জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক উগ্র ডানপন্থী মন্ত্রী ইতামার বেন গভির দাক্কাকে সন্ত্রাসী হিসেবে উল্লেখ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে বেন গভির মন্তব্য করেন, দাক্কার মৃত্যু স্বাভাবিকভাবেই হয়েছে। তার মৃত্যুর ঘটনায় ইসরায়েলের কোনো আক্ষেপ নেই।

দাক্কা দখলকৃত পশ্চিম তীরের সীমান্তে ইসরায়েলে অবস্থিত শহর বাকা আল-গারবিয়ের বাসিন্দা। এক ইসরায়েলি সেনাকে হত্যার দায়ে ১৯৮৬ সালে তাকে গ্রেপ্তার করে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। এরপর তিনি আর মুক্তি পাননি। কারাগারে থাকা অবস্থাতেই দাক্কা শিশুতোষসহ বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন।

১৯৯৯ সালে কারাবন্দী অবস্থাতেই বিয়ে করেন দাক্কা। ২০২০ সালে কারাগার থেকে গোপনে দাক্কার শুক্রাণু স্থানান্তরের মাধ্যমে তার স্ত্রী সন্তানের জন্ম দেন। পুরো বিষয়টিকে ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে এক ধরনের বিজয় বলে দাবি করেন তার স্ত্রী সানা সালামেহ।

২০২১ সালে দাক্কার বিরল ধরনের হাড়ের মজ্জার ক্যান্সার মাইলোফাইব্রোসিস ধরা পড়ে। এরপর থেকে তার সঠিক চিকিৎসা প্রদান এবং অবিলম্বে তাকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানাতে থাকে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। কিন্তু তাকে মুুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানায় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। আগামী বছর তার মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল।