ইসরায়েলে  বিক্ষোভ চলছেই

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে আবারও বিক্ষোভ করেছেন লাখো ইসরায়েলি নাগরিক। বিচার বিভাগীয় সংস্কার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে ইসরায়েলে যে বিক্ষোভের ঢেউ উঠেছে, তাতে বিতর্কিত ওই পরিকল্পনা থেকে নেতানিয়াহুর পিছু হটার পরও প্রতিবাদ-বিক্ষোভ প্রশমিত হওয়ার কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি।

আর তাই নেতানিয়াহুর স্থগিতাদেশ সত্ত্বেও শনিবার (১ এপ্রিল) লাখো মানুষ বিতর্কিত ওই সংস্কার সম্পূর্ণ বাতিল করার দাবিতে রাস্তায় নামেন। রোববার (২ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

সংবাদমাধ্যম বলছে, বিচার ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের জন্য সরকারি পরিকল্পনার বিরুদ্ধে গত ১৩ সপ্তাহ ধরে ভূখণ্ডটিতে এই বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভের জেরে গত সপ্তাহে এই পরিকল্পনা থেকে পিছু হটেন নেতানিয়াহু। গত সোমবার রাতে তিনি বলেন, ‘আমাদের জনগণের মধ্যে ফাটল আটকাতে’ এ পরিকল্পনা স্থগিত করা হয়েছে।

এরপরও শনিবার ফের বিক্ষোভে নামেন ইসরায়েলিরা। এসময় তারা বিতর্কিত ওই সংস্কার পরিকল্পনা সম্পূর্ণ বাতিল করার দাবি জানান। অবশ্য নেতানিয়াহুর এই সংস্কার পরিকল্পনার বিষয়ে আগেই উদ্বেগ ও অসন্তোষ জানিয়েছে ওয়াশিংটন।

শনিবার ইসরায়েলের প্রেসিডেন্টের বাসভবনের বাইরে বিক্ষোভে অংশ নেন ৩০ বছর বয়সী ইমানুয়েল কেলার। রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘আমরা বিবির (নেতানিয়াহু) মুখ থেকে বেরিয়ে আসা কিছু বিশ্বাস করি না। আমরা বিশ্বাস করি, শুধুমাত্র রাজনৈতিক অবস্থান থেকেই নেতানিয়াহু সংস্কার পরিকল্পনা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যার লক্ষ্য হলো- রাস্তায় মানুষের প্রতিবাদ বন্ধ করা।’

সংবাদমাধ্যম বলছে, ইসরায়েলের বিচার ব্যবস্থাকে সংশোধন এবং সুপ্রিম কোর্টকে দুর্বল করার একটি পরিকল্পনা সম্প্রতি উন্মোচন করেছিল ইসরায়েলের নতুন সরকার। এসব সংস্কার বাস্তবায়ন হলে ইসরায়েলের পার্লামেন্টের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের রায়গুলোকে বাতিল করা সহজ হতো।

তবে সমালোচকরা বলছেন, নেতানিয়াহু সরকারের এই সংস্কার পরিকল্পনা ইসরায়েলের বিচারিক স্বাধীনতাকে পঙ্গু করবে, দুর্নীতিকে আরও উৎসাহিত করবে, সংখ্যালঘুদের অধিকার নষ্ট করবে এবং ইসরায়েলের আদালত ব্যবস্থাকে বিশ্বাসযোগ্যতা থেকে বঞ্চিত করবে।

এছাড়া নতুন এই সংস্কার পরিকল্পনা ইসরায়েলের চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স সিস্টেমকে হুমকির মুখে ফেলবে বলেও দাবি করে আসছেন বিক্ষোভকারীরা। মূলত ওই আইন পাস হলে আইনসভা এবং নির্বাহী বিভাগের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা সীমিত হয়ে যাবে। একইসঙ্গে বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্তমূলক ক্ষমতা পাবেন পার্লামেন্টের আইন প্রণেতারা।