একদিনে ৪০০ ফিলিস্তিনিকে মেরে নেতানিয়াহু বললেন ‘কেবল শুরু’

গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইসরায়েলের বিমান হামলায় একদিনেই নিহত হয়েছেন চার শতাধিক ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন আরও সাড়ে পাঁচশত মানুষ। এ অবস্থাকে ‘কেবল মাত্র শুরু’ বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। খবর বিবিসি ও আল জাজিরার।

গাজায় মঙ্গলবার ভোরে আকস্মিকভাবেই তুমুল বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এসময় বিধ্বস্ত বাড়িঘরে ফেরা গাজাবাসী সেহরি খাচ্ছিলেন। গাজার স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ওই হামলায় ৪০৪ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৫৫৬ জনের মতো আহত হয়েছেন।

চলমান যুদ্ধবিরতি ভেঙে এ নৃশংস গণহত্যার নিন্দায় যখন সারা বিশ্ব সরব, ঠিক তখনই ঊদ্ধত্য ঝরে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর কণ্ঠে। মঙ্গলবার রাতে তিনি বলেন, গাজা উপত্যকায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েল পূর্ণশক্তিতে যুদ্ধ শুরু করেছে।

ভিডিও বিবৃতিতে তিনি সতর্ক করে বলেছেন, এটি কেবল শুরু। ভবিষ্যতে তীব্র আক্রমণের মধ্যেই যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলবে।

গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার ইসরায়েলি বাহিনী কিছু কিছু ড্রোন হামলা চালালেও এই বিমান হামলার তীব্রতা ছিল সবচেয়ে বেশি।

গাজা সিটি, বেইত লাহিয়াসহ উত্তর গাজা, নুসেইরাত শরণার্থী শিবির, দেইর আল বালাহসহ মধ্য গাজা, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস ও রাফাহসহ কয়েক ডজন এলাকায় একযোগে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, গাজায় হামাসের লক্ষ্যবস্তুতে ইসরায়েলি বিমানগুলো বোমা হামলা চালিয়েছে। যদিও নিহতদের বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক এবং অধিকাংশই নারী ও শিশু।

ইসরায়েলি টেলিভিশনে প্রচারিত ভাষণে নেতানিয়াহু দাবি করেন, আমরা কয়েক সপ্তাহের জন্য যুদ্ধবিরতি বাড়িয়েছিলাম, যদিও বিনিময়ে জিম্মিদের ফেরত পাইনি।

তিনি দাবি করেন, আলোচনার জন্য আমরা দোহায় প্রতিনিধি পাঠিয়েছিলাম এবং মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাবও গ্রহণ করেছি, কিন্তু সব প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস।

উল্লেখ্য, মার্কিন দূত উইটকফ উভয় পক্ষের কাছে একটি প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যেখানে ৫০ দিনের যুদ্ধবিরতির জন্য পাঁচজন ইসরায়েলি বন্দির মুক্তি, বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি ও গাজায় মানবিক ত্রাণের প্রবেশাধিকার এবং তিন ধাপের যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শুরুর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।

ওই প্রস্তাবে রাজি হয়ে হামাস শুক্রবার জানায়, একইসঙ্গে গাজা যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময়ের জন্য দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শুরুর অংশ হিসেবে একজন ইসরায়েলি-আমেরিকান সৈন্যকে মুক্তি এবং চার ইসরায়েলি জিম্মির মৃতদেহ ফেরত দেবে তারা।

কিন্তু নেতানিয়াহু চাচ্ছেন,হামাসের হাতে জিম্মি থাকা জীবিত পাঁচ ইসরায়েলির মুক্তি। ইসরায়েলের ধারণা, হামাসের হাতে এখনও ৫৯ জিম্মি রয়েছে, তাদের মধ্যে সম্ভবত ২৪ জন জীবিত রয়েছে।

নেতানিয়াহু মঙ্গলবার বলেন, হামাসকে আমরা সতর্ক করে দিয়েছিলাম- যদি তারা বন্দিদের মুক্তি না দেয়, তাহলে আবার যুদ্ধ শুরু করব আমরা এবং সেটিই করেছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *