একাত্তরে বাংলাদেশ বিষয়ে ভুল পক্ষ নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র: টেড কেনেডি জুনিয়র

মুক্তিযুদ্ধের মৌখিক ইতিহাস সংগ্রহ ও এর প্রদর্শনী ‘ভয়েসেস অব বাংলাদেশ: দ্য জার্নি টু ফিফটি’র উদ্বোধন করেন এডওয়ার্ড টেড এম কেনেডি জুনিয়র। রোববার, ধানমন্ডির বেঙ্গল শিল্পালয়ে

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র সরকার যখন পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিল, সে সময় মুক্তিকামী বাঙালির পাশে দাঁড়িয়েছিলেন দেশটির সিনেটর প্রয়াত এডওয়ার্ড এম কেনেডি। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে মতামত তৈরিতে কাজ করেছিলেন তিনি। আর স্বাধীনতার ৫০ বছর পর এসে তাঁর ছেলে এডওয়ার্ড টেড এম কেনেডি জুনিয়র অকপটে বললেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ভুল পক্ষ নিয়েছিল।

পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আট দিনের সফরে শনিবার বাংলাদেশে এসেছেন টেড এম কেনেডি জুনিয়র। রোববার ধানমন্ডির বেঙ্গল শিল্পালয় পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একাত্তরে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে ওই কথা বলেন তিনি।
টেড এম কেনেডি জুনিয়র বলেন, ‘১৯৭২ সালে আমার বাবা বাংলাদেশে এসেছিলেন।

ঢাকায় তাঁকে দারুণভাবে অভ্যর্থনা জানানো হয়েছিল। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। সেই অভিজ্ঞতার কথা তিনি আমাদের বলেছিলেন। তাঁর পরিবারের সদস্য হিসেবে এখানে আসতে পেরে আমরা গর্বিত।’ তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭১ সালে বাবা বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামে যুক্তরাষ্ট্র ভুল পক্ষ নিয়েছিল। তবে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ায় আমরা খুবই খুশি।’

দুপুরে সপরিবার বেঙ্গল শিল্পালয়ে উপস্থিত হন টেড এম কেনেডি জুনিয়র। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী ক্যাথরিন কিকি কেনেডি, মেয়ে কাইলি কেনেডি, ছেলে টেডি কেনেডি, ভাতিজি গ্রেস কেনেডি অ্যালেন ও ভাতিজা ম্যাক্স অ্যালেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি ছিলেন টেড এম কেনেডি জুনিয়রের চাচা। বেঙ্গল শিল্পালয়ে তাঁদের অভ্যর্থনা জানান বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের সভাপতি আবুল খায়ের, মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী, ট্রাস্টি জিনাত চৌধুরী, নউশীন খায়ের ও যুক্তরাষ্ট্রের ব্ল্যাক হিলস স্টেট ইউনিভার্সিটির ইমেরিটাস অধ্যাপক আহরার আহমেদ।

কেনেডি পরিবারের সামনে বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। মধ্যাহ্নভোজের পর এই অতিথিদের সামনে যন্ত্রসংগীত পরিবেশন করেন বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাঁরা বেঙ্গল শিল্পালয়ে চলমান ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনী ‘ভয়েসেস অব বাংলাদেশ: দ্য জার্নি টু ফিফটি’ ঘুরে দেখেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ঢাকা দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন হেলেন লা-ফেইভ, পাবলিক অ্যাফেয়ার্সবিষয়ক কর্মকর্তা শন ম্যাকিনটোশ ও কালচারাল অ্যাফেয়ার্সবিষয়ক কর্মকর্তা শারলিনা হুসেইন মরগ্যান।