এবার পবিত্র হজ পালনে গিয়ে সৌদি আরবে ১৩০১ জনের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (২৩ জুন) এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন সৌদি আরবের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফাহাদ আল-জালাজেল। তার দাবি, তাদের বেশিরভাগই ছিলেন অননুমোদিত হজযাত্রী, যারা পর্যাপ্ত বিশ্রাম ছাড়াই প্রচণ্ড রোদের মধ্যে দীর্ঘ পথ হেঁটে এসেছিলেন। খবর বিবিসির।
সৌদি আরবে চলতি মৌসুমে তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যেই পবিত্র হজ পালিত হয়েছে। সৌদির জাতীয় আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, হজের সময় এবার তাপমাত্রা চড়েছিল ৫১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে এবার হজযাত্রী মারা গেছেন অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি। সৌদি কর্তৃপক্ষ বলছেন, এবার অন্তত ১০টি দেশের ১ হাজার ৩০১ জন মুসল্লি মারা গেছেন। হজ পালনে এসে এবার সর্বাধিক মারা গেছেন মিসরীয় নাগরিক।
সৌদি আরবের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফাহাদ আল-জালাজেল বলেন, বিস্তৃত পরিসরে রোগবালাই বা কোনো মহামারি ছাড়াই এবার পবিত্র হজ ‘সফলভাবে’ সম্পন্ন হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফাহাদ বলেন, তথ্য সমন্বয়ে দেখা গেছে, এবার মারা যাওয়া হজযাত্রীদের ৮৩ শতাংশই ছিলেন অননুমোদিত- অনিবন্ধিত। তারা পর্যাপ্ত বিশ্রাম বা আরাম করা ছাড়াই সরাসরি প্রচণ্ড রোদের মধ্যে দীর্ঘ পথ হেঁটে এসেছিলেন।
চরম আবহাওয়া ও প্রচণ্ড গরমে সতর্কতা জারির পাশাপাশি সৌদি কর্তৃপক্ষ হাজিদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও অনেকেই তীব্র গরমে হিটস্ট্রোকের শিকার হয়েছেন।
সৌদি বার্তা সংস্থা এসপিএ বলছে, যারা মারা গেছে গেছেন তাদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন বয়স্ক। অনেকে ছিলেন দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত। অনেক হাজি জীবনের শেষপ্রান্তে এসে হজপালনে যান। তাদের আশা থাকে, হজে গিয়ে সেখানেই যেন তাদের মৃত্যু হয়। হজ পালনের সময় মৃত্যুবরণকে সৌভাগ্যের মনে করেন তারা।
হজ করতে প্রত্যেককে হজ ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়। কিন্তু প্রতি বছর অনেকেই অবৈধভাবে সৌদি আরবে প্রবেশ করে হজের কাফেলায় ঢুকে পড়েন। তাদের নির্ধারিত আশ্রয় কিংবা বিশ্রামের সুযোগ থাকে না। অনেককে শনাক্ত করে ফেরত পাঠানো হলেও অননুমোদিত সবাইকে ধরাটা সম্ভব হয় না। এই ‘অনুমোদনহীন হজ’ সমস্যাকে এবার অতিরিক্ত মুসল্লির মৃত্যুর জন্য দায়ী করা হচ্ছে।