এরদোগানের জন্য দারুণ উপহার :রাশিয়ার উদ্যোগে স্বাভাবিক হচ্ছে সিরিয়া-তুরস্ক সম্পর্ক

পয়গাম ডেস্ক :

বুধবার রাশিয়ার উদ্যোগে মস্কোতে সিরিয়া-তুরস্ক যে সামরিক বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে, তা ছিল আঙ্কারা ও দামেস্কের মধ্যে বিভাজন দূর করে সম্প্রীতি অর্জনের সর্বশেষ প্রচেষ্টা। ২০২৩ সালে তুরস্কের সাধারণ নির্বাচনের আগে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সাথে একটি সম্ভাব্য বৈঠক সম্ভবত রাশিয়ান প্রতিপক্ষ ভাদিমির পুতিনের পক্ষ থেকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগানের জন্য একটি দারুণ উপহারে পরিণত হতে যাচ্ছে। ২০১১ সালের গ্রীষ্মে সিরিয়ার বাশা আল-আসাদের সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের মধ্যে আঙ্কারা ও দামেস্কের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। একদিকে, তুরস্ক দামেস্কের বিরুদ্ধে বিরোধীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল এবং সমর্থক হয়ে ওঠে, অন্যদিকে সিরিয়া আঙ্কারার বিরোধিতাকারী ‘কুর্দিশ পিপলস প্রোটেকশন ইউনিটস’ (ওয়াইপিজি) এর সমর্থক হয়ে ওঠে। রাশিয়া ২০১৫ সালে সরকরী শাসনের পক্ষে এই সংঘাতে হস্তক্ষেপ করে এবং অচিরেই সিরিয়ায় সৈন্য মোতায়েন করে কার্যকরভাবে তুরকিয়ের প্রতিবেশী হয়ে ওঠে। তুরস্ক ও রাশিয়া ইউক্রেনে তাদের পারস্পারিক সহযোগিতা জোরদার করার সাথে সাথে তুরস্কের নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে এবং সিরিয়ার অর্থনৈতিক সঙ্কট গভীরতর হচ্ছে। পুতিন দু’পক্ষের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণের জন্য এবং তার, এরদোগান ও আসাদের মধ্যে একটি বৈঠকের জন্য আরও বেশি জোর দিচ্ছেন। সেই লক্ষ্যে রাশিয়া ত্রিপক্ষীয় নিরাপত্তা আলোচনা, গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের মধ্যে বৈঠক এবং রাশিয়ান, তুর্কি ও সিরিয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে বৈঠক করার প্রস্তাব দিয়েছে। তুর্কি ও সিরিয়ার মধ্যে বিভাজন দূর করতে রাশিয়া একটি ধারাবাহিক সামরিক, নিরাপত্তা এবং রাজনৈতিক বৈঠকের পাশাপাশি আঙ্কারা এবং দামেস্কের মধ্যকার ১৯৯৮ সালের আদানা চুক্তির সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছে, যা পিকেকে-এর বিরুদ্ধে সহযোগিতা এবং সিরিয়ার ৫ কিলোমিটার ভেতরে গোষ্ঠিটির অনুপ্রবেশের সম্ভাবনাকে প্রতিহত করবে। তুরস্ক বর্তমানে প্রায় ৩৭ লাখ সিরীয় শরণার্থীর আবাসস্থল। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনে আলোচনার অন্যতম প্রধান শিরোনাম হয়েছে বিষয়টি। এরদোগান তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের পরাজিত করতে দামেস্কের সাথে সুসম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করছেন। আসাদও সিরিয়া থেকে হাজার হাজার তুর্কি সৈন্য প্রত্যাহার, দখলদারিত্বের অবসান এবং সিরিয়ার বিরোধীদের সামরিক ও রাজনৈতিক সমর্থন বন্ধ করতে চান। আশার্ক আল-আসওয়াত।