এলসি খুলতে না পারায় দেশে ব্লাডব্যাগ সংকট

পয়গাম ডেস্ক :

দেশের হাসপাতালগুলোতে ব্লাডব্যাগ সংকট দেখা দিয়েছে। ডলার সংকটের কারণে এলসি খুলতে না পারায় অত্যাবশ্যকীয় চিকিসা উপকরণটির আমদানি বন্ধ থাকায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ব্লাডব্যাগ সংকটের কারণে ব্লাড ব্যাংকগুলো রক্তদাতাদের কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ করতে পারছে না। এতে করে হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজনে রক্ত পরিসঞ্চালন কার্যক্রম ঝুঁকিতে পড়তে চলেছে।

জানা গেছে, ডলার সংকটের কারণে ব্যবসায়ীরা ব্লাডব্যাগ আমদানির জন্য এলসি খুলতে পারছেন না। বৈশ্বিক বাজারে চিকিৎসা-উপকরণটির মূল্যবৃদ্ধি এবং কাস্টমস শুল্ক বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।

চিকিৎসকরা জানান, ব্লাডব্যাগ সাধারণত তিন ধরণের হয়। অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে রোগীর দেহে রক্ত সঞ্চালনে সিঙ্গেল ব্লাডব্যাগ দিয়ে কাজ চালানো হয়। তবে প্লাজমা ও প্লাটিলেট পৃথকীকরণ ও পরিসঞ্চালনের জন্য ডবল ও ট্রিপল ব্লাডব্যাগ প্রয়োজন হয়। রক্ত সংগ্রহ, পৃথকীকরণ, মজুত ও পরিবহনের ক্ষেত্রেও অধিকতর নির্ভরযোগ্য ডবল ও ট্রিপল ব্লাডব্যাগ ব্যবহৃত হয়।

সূত্র জানায়, দেশে সিঙ্গেল ব্লাডব্যাগের চাহিদা তুলনামুলক কম হওয়ায় এ ধরনের ব্যাগের কিছু মজুত এখনও আছে। তবে এরইমধ্যে ডবল ও ট্রিপল ব্লাডব্যাগের সংকট দেখা দিয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও অতি জরুরি পণ্যটি সরবরাহ করতে পারছেন না।

ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের বাজারে বছরে প্রায় ২০ লাখ ব্লাডব্যাগের চাহিদা রয়েছে। এ চাহিদার পুরোটাই পূরণ হয় সিঙ্গাপুর, চীন, যুক্তরাজ্য, জার্মানিসহ কয়েকটি দেশ থেকে আমদানির মাধ্যমে। সম্প্রতি এলসি খোলায় বিপত্তির কারণে গত কয়েক মাস ধরে ব্লাডব্যাগ আমদানি বন্ধ রয়েছে।

দেশে ব্লাডব্যাগ চাহিদার প্রায় অর্ধেক জোগান দিয়ে থাকে জেএমআই গ্রুপ। তবে প্রতিষ্ঠানটির অনলাইন শপে যোগাযোগ করলে সিঙ্গেল, ডবল ও ট্রিপল ব্লাডব্যাগ বর্তমানে নেই বলে জানানো হয়।

জানতে চাইলে জেএমআই সিরিঞ্জেস অ্যান্ড মেডিক্যাল ডিভাইসেস লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক অভিজিত পল বলেন, এলসি খোলার জটিলতার কারণে সাম্প্রতিক সময়ে আমরা পর্যাপ্ত ব্যাগ আমদানি করতে পারিনি। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির দাম বেড়েছে। এছাড়া ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে ব্যাগের দাম প্রায় ২৫ শতাংশ বেড়ে গেছে। তবে কিছুদিনের মধ্যে ছোট একটি চালান আসবে বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী বলেন, বর্তমানে ডবল ও ট্রিপল ব্লাডব্যাগের সংকট বেশি। ডলার সংকটের কারণে গত বছরের আগস্ট থেকে আমরা ব্লাডব্যাগ আমদানি করতে পারিনি। ইউরোর দামও অনেক বেশি। এছাড়া কাস্টমস শুল্ক মার্জিন ১৫ শতাংশ বেড়েছে। সব মিলিয়ে ব্লাডব্যাগ আমদানির খরচ অনেক বেড়ে গেছে। দাম বেশি বেড়ে গেলে বাজারে বিক্রি করা যাবে না।