ওষুধের মূল্য নির্ধারণ নিয়ে দ্বন্দ্ব, সীমাহীন ভোগান্তি পাকিস্তানে

ওষুধের মূল্য নির্ধারণ নিয়ে পাকিস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ওষুধ কোম্পানিগুলোর দ্বন্দ্বের জেরে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছেন দেশটির জনগণ। প্রাণরক্ষাকারী বিভিন্ন ওষুধ আর খোলাবাজারে মিলছে না, সাধারণ লোকজনকে নির্ভর করতে হচ্ছে চোরা বা কালোবাজারের ওপর।

সরকার ও ওষুধ কোম্পানিগুলোর মধ্যকার দ্বন্দ্বের মূল কারণ অবশ্য পাকিস্তানে চলমান তীব্র অর্থনৈতিক সংকট। দেশটির ওষুধ কোম্পানিগুলোর জোট পাকিস্তান কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগস অ্যাসোসিয়েশনের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, ডলারের মজুত তলানিতে নেমে যাওয়া এবং তার জেরে ধারাবাহিকভাবে পাকিস্তানি রুপির দাম পড়তে থাকায় অন্যান্য জিনিসপত্রের মতো ওষুধের বিভিন্ন কাঁচামালের দামও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

ফলে ওষুধ প্রস্তুতের (মেনুফ্যাকচারিং) খরচ গেছে বেড়ে। বাড়তি এই উৎপাদন খরচে ভারসাম্য আনতে গত মাসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে সব ওষুধের দাম গড়ে ৩৮ শতাংশ বাড়ানোর আর্জি জানিয়েছিল পাকিস্তান কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগস অ্যাসোসিয়েশন; কিন্তু মন্ত্রণালয় সেই দাবি পুরোপুরি খারিজ করে দিয়েছে।

সরকারের এই প্রত্যাখ্যানের পর অ্যাসোসিয়েশনভুক্ত কোম্পানিগুলোর একাংশ ওষুধ প্রস্তুত প্রায় পুরোপুরি বন্ধ রেখেছে। অপর কয়েকটি কোম্পানি এখনও ওষুধ প্রস্তুত করছে; তবে একেবারেই সীমিত পরিমাণে এবং খোলাবাজারে সেসব ওষুধ পাওয়াও যাচ্ছে না। গোপনে দ্বিগুণ-তিনগুণ দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে সাধারণ ভোক্তাদের।   

কাটা ঘায়ে নুনের ছিটার মতো এই সংকটকে আরও ঘনীভূত করে তুলেছেন আমদানিকারকরা। ডলার সংকটের কারণে সাধারণ অ্যানেস্থেশিয়া, প্লাজমা থেকে প্রস্তুত ওষুধ-টিকা, ক্যান্সারের চিকিৎসা উপকরণ-ওষুধ ও বায়োলজিক্যাল পণ্য সহ প্রায় ১০০ প্রাণরক্ষাকারী ওষুধ আমদানি বন্ধ বা ব্যাপকভাবে কমিয়ে দিয়েছেন আমদানিকারকরা। ফলে বর্তমানে দেশজুড়ে প্রাণরক্ষাকারী বিভিন্ন ওষুধের জন্য প্রায় হাহাকার চলছে পাকিস্তানে।