কে মুসলিম, কে কাফের এটা বলার অধিকার আল্লাহ মানুষকে দেননি: প্রধানমন্ত্রী

শান্তির ধর্ম ইসলামের উদারনীতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা সত্যিকারে ইসলামে বিশ্বাস করে তারা অন্য ধর্মের প্রতি সহনশীল। মহান আল্লাহ বিচারের ভার মানুষকে দেয়নি বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, যারা সত্যিকার ইসলামে বিশ্বাস করে তাদের অন্যের ধর্মের প্রতিও সহনশীল হতে হবে।

আমাদের বাংলাদেশে আমরা চাই সব ধর্মের সমান অধিকার। যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে।

শেষ বিচার তো আল্লাহ করবেন। বিচারের ভার আল্লাহ মানুষকে দেননি। কোনো মানুষকে দেননি। বরং খুনখারাবি করতে গিয়ে আমাদের ধর্মের অসম্মান করা হচ্ছে বিশ্বে।

সরকার প্রধান বলেন, ধর্মের নাম ব্যবহার করে, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস করে এলে ইসলামকে মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়। অথচ, ইসলাম হচ্ছে সবচেয়ে শান্তির ধর্ম। আল্লাহ আমাদের কোনো বান্দাকে এই অধিকার দেন নাই। কে ধর্মী, কে বিধর্মী, কে কাফের, কে ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করে, কে করে না; সে নির্দেশ দেওয়ার অধিকার আল্লাহ কোনো মানুষকে দেননি।

ইসলাম ধর্ম সেই শিক্ষা দেয় সকল ধর্মের প্রতি সহনশীলতা দেখানো। আমাদের নবীও আমাদের সেই শিক্ষাই দিয়েছেন। প্রত্যেক মানুষ যার যার কর্মফল ভোগ করবে। আমি অন্যায় করলে আমার কর্মফল তো আরেকজন ভোগ করবে না। মানুষকে কে এই অধিকারটা দিল কে ধর্মে বিশ্বাস করে, কে করবে না তাকে শাস্তি দিতে হবে, তাকে খুন করতে হবে? জীবন তো আল্লাহ দিয়েছেন। জীবন দেওয়ার মালিকও তিনি, নেওয়ার মালিকও তিনি।

ইসলামে নারীর অধিকারের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলামই কিন্তু নারীদের অধিকার নিশ্চিত করেছে। আমরা যেমন কোনো কোনো দেশে দেখি নারীদের শিক্ষা নিতে দেবে না। ইসলাম কিন্তু সেই শিক্ষা দেয় না। ইসলাম কিন্তু সবাইকে শিক্ষা গ্রহণ করতে বলেছে। নবীও আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করতে বলেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারা দেশে তৃতীয় ধাপে আরও ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ধর্ম পালনের সাথে সাথে যেন ধর্মীয় শিক্ষার সুযোগ হয়, সে জন্য আমরা মসজিদগুলো করে দিয়েছি। আমরা চাই আমাদের দেশটা উন্নত হোক, এগিয়ে যাক। বাল্যবিবাহ, যৌতুক, নারীর প্রতি সহিংসতা, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টি করা একান্ত প্রয়োজন।

দেশকে এগিয়ে নিতে সবার দোয়া চেয়ে সরকার প্রধান বলেন, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে। পবিত্র রমজানে আপনাদের কাছে দোয়া চাই। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কাজ যেন আমরা আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি সে জন্য দোয়া চাই।

সরকারি অর্থায়নে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৯ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা। শুধু নামাজ আদায় নয়, এসব মসজিদ হবে গবেষণা ইসলামি সংস্কৃতি ও জ্ঞানচর্চা কেন্দ্র।