গণধর্ষণ ও হত্যার দায়ে পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড

শরীয়তপুরে এক নারীকে গণধর্ষণের পর হত্যার দায়ে ৫ আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া প্রত্যেক আসামিকে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে শরীয়তপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. সোহেল আহমেদ এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—নিজাম বালী (৪৫), মোহাম্মদ আলী (৩৫), ওমর ফারুক বেপারী (২৪), আল আমীন বেপারী (২০) ও ইব্রাহীম মোল্লা (২১)।

দণ্ডপ্রাপ্তরা সবাই ডামুড্যা উপজেলার দক্ষিণ সুতলকাঠীর বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় ২ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আদালতের নির্দেশে তাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর তিন আসামি পলাতক রয়েছেন।

নিহত ফিরোজা বেগমের ছেলে চিকিৎসক শাহ জালাল হাওলাদার বলেন, আমরা রায়ে খুশি হয়েছি। সরকারের কাছে দাবি দ্রুত যেন এই রায় কার্যকর হয়।

শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট ফিরোজ আহমেদ বলেন, এটি একটি ঐতিহাসিক হত্যাকাণ্ডের রায়। এক নারীকে গণধর্ষণ ও নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই মামলায় পাঁচজন আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ এই রায়ে সন্তুষ্ট।

তবে এই রায়ে অসন্তোষ জানিয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী নাসরিন আক্তার বলেন, এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল বিকেল ৫টার দিকে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন ডামুড্যা উপজেলার ধানকাঠি ইউনিয়নের ভূঁইয়া বাজার এলাকার ৫৫ বছর বয়সী নারী ফিরোজা বেগম। ২১ এপ্রিল বাড়ি থেকে ১০ কিলোমিটার দূরের পূর্ব ডামুড্যা ইউনিয়নের বড় নওগা এলাকার আব্দুর রহমান মাস্টারের বাড়ির পূর্ব পাশের একটি পরিত্যক্ত ডোবা থেকে তাঁর হাত ভাঙা ও মাথায় আঘাতের চিহ্নসহ মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

পরের দিন ফিরোজার ছোট ভাই লাল মিয়া সরদার বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ২–৩ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে শরীয়তপুর আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন। আসামিদের মধ্যে পাঁচজন জড়িত থাকায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। বাকি আসামিরা অব্যাহতি পায়।

পরে ২৮ এপ্রিল নিজাম বালীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরেরদিন ওমর ফারুক ও মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা ওই নারীকে ধর্ষণের পর হত্যার কথা আদালতের কাছে স্বীকার করেন। আর অন্য দুই আসামি ইব্রাহিম ও আল-আমীন পলাতক আছেন। আর ওমর ফারুক জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছেন। এ ঘটনায় পরবর্তীতে পুলিশ ওই ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। এরপর ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ দুপুরে শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন।