গাজায় এখন আর ‘স্বাভাবিক আকারের শিশু’ জন্ম নিচ্ছে না: জাতিসংঘ

গাজা উপত্যকার বর্তমান পরিস্থিতি প্রসূতি মা ও নবজাতকদের জন্য একটি দুঃস্বপ্নের মতো। চিকিৎসকদের রিপোর্টে দেখা গেছে, সেখানে ছোট আকৃতির এবং অসুস্থ নবজাতক জন্ম নিচ্ছে। মৃত শিশু প্রসবের ঘটনাও ঘটছে। এছাড়া নারীরা পর্যাপ্ত অ্যানেস্থেশিয়া ছাড়াই অস্ত্রোপচারের (সিজারিয়ান সেকশন) মাধ্যমে শিশু জন্ম দিতে বাধ্য হচ্ছেন। ১৫ মার্চ, শুক্রবার জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা এই কথাগুলো বলেছেন।

ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) প্রতিনিধি ডমিনিক অ্যালেন জেরুজালেম থেকে একটি ভিডিও সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গাজা উপত্যকায় প্রসূতি মা এবং নবজাতকদের দুর্দশার চিত্র তুলে ধরেছেন।

তিনি বলেছেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে এই সপ্তাহে গাজা ছেড়ে চলে যাচ্ছি। তবে আমি গাজার ১০ লাখ নারী ও মেয়ে শিশুর জন্য আতঙ্কিত। বিশেষ করে যারা প্রতিদিন সন্তান জন্ম দিচ্ছেন তাদের জন্য দুশ্চিন্তা হচ্ছে। গাজায় প্রতিদিন ১৮০ জন নারী সন্তান জন্ম দিচ্ছেন।

গাজার উত্তরাঞ্চলে এখনও যেসব হাসপাতালে প্রসূতিদের সেবা দেওয়া হচ্ছে, সেগুলো পরিদর্শন করেছেন ডমিনিক অ্যালেন। তিনি সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে বলছেন, ‘গাজার চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, তারা আর স্বাভাবিক আকৃতির নবজাতক দেখতে পাচ্ছেন না। এছাড়া আগের চেয়ে মৃত শিশু প্রসবের ঘটনা এখন বেশি বেড়ে গেছে। এমনকি নবজাতকের মৃত্যুও বেশি হচ্ছে। এজন্য অপুষ্টি, পানিশূন্যতা ও শারীরিক জটিলতাকে দায়ী করেছেন তারা।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘সন্তান জন্মদানের ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের জন্য পর্যাপ্ত চেতনানাশকের অভাবের কথাও আমি জানতে পেরেছি। এটি ছাড়াই প্রসূতি মায়েরা অস্ত্রোপচার করতে বাধ্য হচ্ছেন। বিষয়টি ভাবাই যায় না।’

তিনি যোগ করেছেন, ‘গাজায় যা ঘটছে তা একটি দুঃস্বপ্নের মত। এটি মানবিক সংকটের চেয়ে অনেক বেশি। এটি মানবতার সংকট। গাজার রাস্তায় গাড়ি চালানোর সময় আমি যা দেখেছি তাতে সত্যিই আমার হৃদয় ভেঙে গেছে।’

উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। ৫ মাসের বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে কমপক্ষে ৩১ হাজার ৪৯০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহতদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু।

সূত্র: এএফপি