গাজায় যুদ্ধের আঁধারেও লাইলাতুল কদরের আলো

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলায় বিধ্বস্ত গাজায় এবারের রমজান ছিল বিবর্ণ। ধ্বংসপ্রাপ্ত মসজিদের ধ্বংসাবশেষে ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে লাইলাতুল কদর পালন করেছেন গাজাবাসী। অথচ রমজান আসলে পুরো ফিলিস্তিন যেন সেজে উঠত। নানা আয়োজন, আলোকসজ্জায় বরণ করা হতো রমজানকে। এবার সেই চেনা দৃশ্য নেই।

গত শুক্রবার একই দিনে জুমাতুল বিদা ও লাইলাতুল কদর পালিত হয়। গাজাবাসী রমজানের শেষ জুমায় অংশ নিতে জড়ো হন উত্তর গাজা উপত্যকা এবং গাজা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংসপ্রাপ্ত রাস্তায়, পাবলিক স্কোয়ার ও মসজিদে।

ইফতারের পর তারা ধ্বংসস্তুপের মসজিদগুলো বা তার পার্শ্ববর্তী রাস্তায় চলে যান। তারাবিহর নামাজ আদায়ের পর ভোর পর্যন্ত তারা বিভিন্ন ইবাদত বন্দেগিতে মগ্ন ছিলেন। এভাবেই বিবর্ণ পরিস্থিতিতে নিজেদের স্রষ্টার হাতে সঁপে দিয়েছেন বিধ্বস্ত গাজা জনপদের লোকজন।

উত্তর গাজা উপত্যকার জাবালিয়া শিবিরে ধ্বংস হওয়া আল-খলিফা মসজিদের স্কোয়ারে মুসল্লিদের সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা গেছে। রাতেও মসজিদটি হামলার আশঙ্কা থেকে মুক্ত ছিল না।

পুরো রাত মসজিদে অতিবাহিত করা খালেদ শাবান বলেন, ‘যুদ্ধের মধ্যেও আমরা লায়লাতুল কদর পার করেছি। আমরা প্রতি বছরই এই মহান রাতটির জন্য অপেক্ষা করি। বছরে এটি একবারই আসে। ফলে আমরা এটি মিস করতে পারি না। আমরা এই যুদ্ধের অবসানের জন্য আল্লাহর কাছে দুয়া করেছি। মসজিদের ধ্বংসস্তুপ থেকেও আমরা এই আহ্বান চালিয়ে যাব।’

গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় হামলা চালিয় যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। সাত মাসে পড়েছে, অথচ ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এ হামলা থামানোর কোনো ইচ্ছাই দেখা যাচ্ছে না।

ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং প্রায় ৭৬ হাজার ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে প্রায় পুরো গাজা উপত্যকা। জাতিসংঘ বারবার সতর্ক করছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে গাজায় দুর্ভিক্ষাবস্থা বিরাজ করছে।