গাজায় ১৫ হাজারের বেশি শিশু নিহত

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৩৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। এর মধ্যে ১৫ হাজারের বেশি শিশু। ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। খবর আল জাজিরার।

গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় পাল্টা আক্রমণ চালায় ইসরায়েল। তারপর থেকে প্রতিদিনই নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর বর্বর হামলা অব্যাহত রয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত সাত মাসে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৩৫ হাজার ২৭২ জন নিহত হয়েছেন। নিহত মানুষদের অধিকাংশই শিশু ও নারী। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ৭৯ হাজার ২০৫ জনের বেশি মানুষ।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ইসরায়েলি বাহিনী ট্যাংকবহর নিয়ে উত্তর গাজার জাবালিয়া শহরের কেন্দ্রস্থলে হামলা করছে। সেখানে হামাস সদস্যদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাদের। দক্ষিণে রাফা শহরে খুব বেশি সামনে অগ্রসর হয়নি ইসরায়েলি বাহিনী। তারা একই অবস্থান থেকে বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা করছে। তাদের অভিযানের এই ধীরগতিতে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামাসকে নির্মূলে চালানো এ অভিযান নিয়ে বড় ধরনের সমস্যার মুখে পড়েছেন।

গাজার উত্তরাঞ্চলে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনীর তীব্র লড়াই চলছে। ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলো রকেট এবং উন্নত বিস্ফোরক ডিভাইস দিয়ে অতর্কিত আক্রমণ চালাচ্ছে। ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি (আইআরসি) জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজার রাফা শহরে ইসরায়েলি বাহিনীর স্থল অভিযানের কারণে খাদ্য এবং পানির সংকট তীব্র হয়ে উঠেছে। এছাড়া সেখানে পর্যাপ্ত স্যানিটেশনের অভাবও দেখা দিয়েছে।

এদিকে যুদ্ধ-পরবর্তী গাজা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর অনির্দিষ্ট পরিকল্পনাকে চ্যালেঞ্জ করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট। ফলে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার মধ্যে যে বড় ধরনের ফাটল ধরেছে তা আর গোপন রাখা গেল না। প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, গত অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলের স্থল অভিযান শুরু হওয়ার পরপরই তার নেতৃত্বাধীন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মন্ত্রিপরিষদে একটি যুদ্ধ পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছিল। সেখানে শত্রুভাবাপন্ন নয় এমন একটি স্থানীয় বিকল্প ফিলিস্তিনি শাসকগোষ্ঠী প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। তবে তাতে সাড়া পাওয়া যায়নি।

বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু কঠোর ভাষায় এর জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তিনি ফাতাস্থানের সঙ্গে হামাস্তানের বিনিময় করতে প্রস্তুত নন। ফিলিস্তিনের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী সংগঠন হামাস ও ফাতাহকে ইঙ্গিত করেছেন তিনি।

মিশর ও ইসরায়েলের মধ্যেও উত্তেজনা ক্রমাগত বাড়তে শুরু করেছে। এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাফায় হামলার কারণে কায়রো তেল আবিবের সঙ্গে সম্পর্ক কমিয়ে আনার বিষয়ে ভাবছে।