
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় গত ১৯ মাসে ইসরায়েল এক লাখ টনেরও বেশি বিস্ফোরক ফেলেছে বলে দাবি করেছে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তারা জানায়, এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৬২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত বা নিখোঁজ হয়েছেন।
বিবৃতিতে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া যুদ্ধের পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের তীব্র হামলায় এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন ১০ হাজারের বেশি মানুষ, যাদের ভাগ্য অজানা। এই সময়কালে ১২ হাজারের বেশি গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে ১১ হাজার ৯২৬টি সরাসরি ফিলিস্তিনি পরিবারের ওপর চালানো হয়েছে। এর ফলে ২ হাজার ২০০টি পরিবার সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে এবং ৬ হাজার ৩৫০ জন মানুষ নাগরিক তালিকা থেকে মুছে গেছেন।
ইসরায়েলি হামলায় কবরস্থানও রেহাই পায়নি। কবর থেকে প্রায় ২ হাজার ৩০০ মৃতদেহ তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এছাড়া, হাসপাতালের ভেতরেই সাতটি গণকবর তৈরি করা হয়েছে, যেখান থেকে ৫২৯টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
গাজা কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য সংকট নিয়েও উদ্বেগজনক তথ্য দিয়েছে। মিডিয়া অফিসের মতে, জবরদস্তি বাস্তুচ্যুতি ও স্বাস্থ্য অবকাঠামো ধ্বংসের ফলে সংক্রামক রোগ মারাত্মক হারে ছড়িয়েছে। ২১ লাখেরও বেশি সংক্রমণের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে, যার মধ্যে ৭১ হাজার ৩৩৮টি হেপাটাইটিসের।
ইসরায়েলি ধ্বংসযজ্ঞে ধর্মীয় ও মানবিক স্থাপনাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হামলায় ৮২৮টি মসজিদ সম্পূর্ণ এবং ১৬৭টি আংশিকভাবে ধ্বংস হয়েছে। এছাড়াও তিনটি গির্জা ও ১৯টি কবরস্থান সম্পূর্ণ বা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, ইসরায়েল ‘ক্ষুধার নীতি’ প্রয়োগ করেছে। এ পর্যন্ত তারা ৬৬টি ত্রাণকেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে ২৯টি ফুড কিচেন ও ৩৭টি সাহায্যকেন্দ্র রয়েছে। দুই মাস আগে সীমান্ত ক্রসিং সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়ায় ৩৭ হাজার ৪০০ ট্রাক সাহায্য ও জ্বালানি প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই সামরিক অভিযানে নিহতের সংখ্যা ইতিমধ্যে ৫২ হাজার ৮০০ ছাড়িয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।