ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার পুরো স্থলসীমান্ত নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে ইসরায়েল। গাজা ও মিসর সীমান্তবর্তী বাফার জোন ‘ফিলাডেলফি করিডোর’ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বিশ্ব থেকে গাজাকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে ইসরায়েল। এদিকে গাজাজুড়ে নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। সর্বশেষ এক দিনে গাজায় ৬০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আহত হয়েছেন ২৮০ জন। খবর বিবিসি ও আল জাজিরার।
গাজার দক্ষিণের রাফাহ শহরে গত ৭ মে স্থল অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)। পরদিন তারা মিশরের সঙ্গে থাকা রাফাহ সীমান্তক্রসিং নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ঘোষণা দেয়। এরপর থেকে মিশরের সঙ্গে থাকা গাজার এই সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ রয়েছে।
সর্বশেষ শুক্রবার (৩১ মে) ফিলাডেলফি করিডোরের পুরো নিয়ন্ত্রণ নেওয়ারও ঘোষণা দেয় ইসরায়েল। আইডিএফ মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, ইসরায়েল বাহিনী ফিলাডেলফি করিডোরের ‘অপারেশনাল’ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।
মিশরের সঙ্গে ইসরায়েলের ১৯৭৯ সালের ক্যাম্প ডেভিড শান্তিচুক্তির আওতায় গাজার দক্ষিণে ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১০০ মিটার প্রস্থ ফিলাডেলফি করিডোর প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ করিডোরকে বাফার জোন (অসামরিক অঞ্চল) ঘোষণা করা হয়।
চুক্তি অনুযায়ী, ইসরায়েলকে এই করিডোরে সীমিত আকারে সেনা মোতায়েনের সুযোগ দেওয়া হয়। অবশ্য ২০০৫ সালে গাজা থেকে নিজেরাই সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছিল ইসরায়েল।
এদিকে রাফাহ ক্রসিং নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে মিশর। দেশটি এ পদক্ষেপকে শান্তিচুক্তির লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে। এ নিয়ে মিশরের সঙ্গে দেশটির সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা দেয়। এমনকি গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তির মধ্যস্থতা থেকেও দেশটি সরে যেতে পারে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
এদিকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় মৃত্যুর মিছিল চলছেই। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় গাজার রাফা শহরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৬০ জন। আহত হয়েছেন আরও ২৮০ জন।
হালনাগাদ তথ্যে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রাণহানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬ হাজার ২৮৪ জনে। এছাড়া আহত হয়েছেন ৮২ হাজার ৫৭ জন। হতাহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।