গাজার সেই শহরে আবারও নারকীয় হামলার ঘোষণা

ফিলিস্তিনের গাজার একটি শহরে নতুন করে নারকীয় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল। এ জন্য সেখান থেকে বাসিন্দাদের সরে যেতে আহ্বান জানানো হয়েছে। চার মাস আগে এ শহরটিতেই ভয়ংকর হামলা চালিয়ে অসংখ্য বেসামরিক ফিলিস্তিনি হত্যা করে ইসরায়েল। সন্ধান মেলে গণকবরের।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দেশটির সামরিক বাহিনী আইডিএফ-এর বরাতে দ্য টাইমস অব ইসরায়েল এ তথ্য জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর গাজার বেইত লাহিয়ার কিছু অংশের বাসিন্দাদের অন্যান্য এলাকায় সরে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এসব এলাকায় নতুন করে সর্বাত্মক অভিযান শুরু করা হবে।

আইডিএফ-এর আরবি-ভাষার মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল আভিচায় আদ্রাই ঘোষণার পাশাপাশি বেইত লাহিয়ার যে এলাকাগুলো থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া দরকার তার একটি তালিকা প্রকাশ করেছেন।

গাজার সেই শহরে আবারও নারকীয় হামলার ঘোষণা
আবারও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীকে সতর্ক করলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট
আইডিএফ-এর ঘোষণায় বেইত লাহিয়ার বাসিন্দাদের উদ্দেশে বলা হয়, ‘আপনি একটি বিপজ্জনক যুদ্ধ অঞ্চলে আছেন। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী সন্ত্রাসী অবকাঠামো ও তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাবে।’

হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েল গাজায় স্থল অভিযান শুরু করে। এরপর থেকে উত্তর গাজার বাসিন্দাদের দক্ষিণে সরে যেতে বলে আসছে। তারা বলছে, বাসিন্দাদের বড় একটি অংশ যুদ্ধাঞ্চল থেকে না সরায় বেসামরিক নাগরিকদের হতাহতের ঘটনা বাড়ছে। তবে ইসরায়েল কখনো বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে না।

অথচ ইসরায়েল দফায় দফায় গাজার হাসপাতালগুলোতে হামলা করছে। নিহত হচ্ছে নারী ও শিশু।

এই বেইত লাহিয়ায় চার মাস আগে ইসরায়েলি বাহিনী অভিযান চালায়। তারা সেখান থেকে চলে গেলে একটি গণকবরে ২০টি মরদেহ পাওয়া যায়। আবর্জনা ও বালু দিয়ে মরদেহগুলো ঢাকা ছিল। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মরদেহগুলো আল–আসসাফ পরিবারের সদস্যদের।

ধারণা করা হচ্ছে, ওই এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনী অনুপ্রবেশের পর তল্লাশিচৌকি স্থাপন করে। নিহতরা সেই চৌকি পার হওয়ার সময় তাদের হত্যা করা হয়।

এবার আবারও সেখানে বড় ধরনের হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে দখলদাররা। এতে বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক বিরাজ করছে।

আলজাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলা কমার কোনো লক্ষণ নেই। ছোট্ট এই উপত্যকার উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণ অঞ্চলে দিনরাত বোমা ও স্থল হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী।

অন্যদিকে গাজা সিটিতে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্য এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। যদিও এই শহরে অভিযান সম্পন্ন করার দাবি করে আসছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে হামাস। একই দিন হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল।