
২০২৪ সালের শেষ নাগাদ ইসরায়েলের চলমান গাজা যুদ্ধের ব্যয়ের পরিমাণ ২৫০ বিলিয়ন শেকেল (৬৭.৫৭ বিলিয়ন ডলার) ছাড়িয়ে গেছে। ইসরায়েলের বাণিজ্য বিষয়ক পত্রিকা ক্যালকালিস্টের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে আনাদোলু।
ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বরাত দিয়ে শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) প্রকাশিত ক্যালকালিস্টের প্রতিবেদনে সরাসরি সামরিক ব্যয়, বেসামরিক খাতে খরচ এবং রাজস্ব ক্ষতির হিসাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে এই পরিসংখ্যানে যুদ্ধের সার্বিক প্রভাব যুক্ত হয়নি।
প্রতিবেদনটিতে যুদ্ধের এই ব্যয়কে ‘ভারী বোঝা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং যুদ্ধ প্রচেষ্টার ব্যর্থতার সমালোচনা করা হয়েছে। পরবর্তী দশকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাজেট উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথাও বলা হয়েছে।
যুদ্ধের কারণে ইসরায়েলের বাজেটে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হচ্ছে। বিশেষ করে ভূমধ্যসাগরে প্রাকৃতিক গ্যাস সম্পদ থেকে আসা রাজস্ব পুনর্বণ্টন করা হচ্ছে। এ রাজস্ব মূলত স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষাখাতে ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ ছিল, কিন্তু বর্তমানে সেগুলো প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে নাগেল কমিশনের সাম্প্রতিক সুপারিশের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। কমিশন আগামী এক দশকের জন্য প্রতিরক্ষায় অতিরিক্ত ২৭৫ বিলিয়ন শেকেল (৭৪ বিলিয়ন ডলার) বরাদ্দ এবং প্রতি বছর ২৭.৫ বিলিয়ন শেকেল (৭.৪ বিলিয়ন ডলার) বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য যুদ্ধের বিভিন্ন বিষয়ে সুপারিশ তৈরি করে থাকে এই কমিশন।
কমিশন ইসরায়েলের বহু স্তরবিশিষ্ট আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার প্রস্তাব দিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে আয়রন ডোম এবং নতুন কার্যকর লেজার সিস্টেম। পাশাপাশি জর্ডান ভ্যালি সীমান্তে একটি সুরক্ষিত ব্যারিকেড নির্মাণের পরিকল্পনাও রয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত ৪৬ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এই অভিযান গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে এবং সেখানে ব্যাপক দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।