গায়ানার ভূখণ্ডে চোখ ভেনিজুয়েলার, রণতরী পাঠাচ্ছে যুক্তরাজ্য

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ গায়ানাকে সহায়তার জন্য যুদ্ধজাহাজ পাঠাচ্ছে যুক্তরাজ্য। তেল ও স্বর্ণসহ খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ একটি বিরোধপূর্ণ অঞ্চল নিয়ে প্রতিবেশী ভেনিজুয়েলার হুমকির মুখে থাকা সাবেক উপনিবেশ গায়ানাকে কূটনৈতিক ও সামরিক সমর্থন দিতেই যুক্তরাজ্য রণতরী এইচএমএস ট্রেন্ট পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। খবর বিবিসির।

গায়ানা একটি কমনওয়েলথ সদস্য এবং দক্ষিণ আমেরিকার একমাত্র ইংরেজিভাষী দেশ। ১৫০ বছরের ঔপনিবেশিক শাসন শেষে ১৯৬৬ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে গায়ানা।

তবে প্রতিবেশী দেশ ভেনিজুয়েলা গুয়ানিজ ভূখণ্ডের এসেকুইবো অঞ্চলকে নিজের বলে দাবি করে আসছে, যা তেল ও খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ। সম্প্রতি ভেনিজুয়েলা বিতর্কিত ওই ভূখণ্ডের দাবি জোরদার করায় সংঘাতের আশঙ্কায় পড়েছে গায়ানা।

ভেনেজুয়েলার সরকার চলতি মাসের শুরুর দিকে গায়ানার এসেকুইবো অঞ্চলকে সংযুক্ত করার হুমকি দেয়। এমনকি ওই অঞ্চলে ভেনেজুয়েলার যেকোনো মুহূর্তে আক্রমণের আশঙ্কাও তৈরি হয়।

এমন পরিস্থিতিতে সাবেক উপনিবেশ গায়ানাকে সহায়তার জন্যই যুদ্ধজাহাজ পাঠাতে যাচ্ছে ব্রিটেন। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে, এইচএমএস ট্রেন্ট রণতরীকে ক্রিসমাসের পর যৌথ মহড়ার জন্য গায়ানায় পাঠানো হচ্ছে।

এইচএমএস ট্রেন্ট রণতরী একটি অফশোর টহল জাহাজ , যেটিকে মাদক চোরাচালানকারীদের বিরুদ্ধে ক্যারিবিয়ান সাগরে মোতায়েন করা হয়েছিল।

এইচএমএস ট্রেন্টে ৬৫ জন ক্রু রয়েছে, রণতরীটির সর্বোচ্চ গতি ২৪ নট এবং ৫০০০ নটিক্যাল মাইল। এটি ৩০ মিমি কামানসহ রয়্যাল মেরিন সেনাদের একটি দল দিয়ে সজ্জিত। যুদ্ধজাহাজটি মার্লিন হেলিকপ্টার ও মনুষ্যবিহীন বিমানও মোতায়েন করতে পারে।

জানা গেছে, এইচএমএস ট্রেন্ট বর্তমানে ক্রিসমাসের জন্য বার্বাডোজের ব্রিজটাউনে রয়েছে। বড়দিনের পর যুদ্ধজাহাজটি গিয়ে গায়ানার রাজধানী জর্জটাউনে নোঙর করবে। গায়ানার নৌবাহিনী ও অন্য মিত্রদের পরিদর্শন শেষে যুদ্ধজাহাজটি যৌথ মহড়া ও প্রশিক্ষণ পরিচালনা করবে।

ভেনেজুয়েলা দীর্ঘকাল ধরে এসেকুইবোর মালিকানা দাবি করে আসছে। অঞ্চলটি ৬১ হাজার বর্গমাইল অঞ্চল যা গায়ানার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ নিয়ে গঠিত। এসেকুইবোর পাহাড় ও জঙ্গল সোনা, হীরা ও বক্সাইটে সমৃদ্ধ, অন্যদিকে উপকূলে মিলেছে বিশাল তেলের মজুত।

গায়ানার অর্থনীতি দ্রুত বর্ধনশীল হলেও ভেনিজুয়েলা অর্থনৈতিকভাবে বেশ বিপরর্যস্ত। আর সে কারণেই এসেকুইবোর মালিকানা দাবির বিষয়টি ছাড়ছে না দেশটি।

শুধু তাই নয়, ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো গত ৩ ডিসেম্বর এসেকুইবোতে তার দেশের দাবির পক্ষে জনসমর্থন জাহির করতে গণভোটও করেছেন।