ঘূর্ণিঝড় রিমালের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসন। বন্দরে ‘অ্যালার্ট ৩’ জারি করা হয়েছে। চারটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। জেটি ও বর্হিনোঙ্গরে থাকা জাহাজের পণ্য উঠানামা-খালাস বন্ধ করা হয়েছে।তবে, যেসব জাহাজে পণ্য উঠানামা অর্ধ সমাপ্ত অবস্থায় আছে, সেসব জাহাজে দ্রুত কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে।
এছাড়া বন্দর চ্যানেল, জাহাজ, জেটি, ইয়ার্ড, শেড, হ্যান্ডলিং ইকু্ইপমেন্ট নিরাপদ রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রাতে জোয়ার না থাকায় জেটিতে থাকা বড় জাহাজ সরানো না গেলেও সকাল ১০টার জোয়ারে সকল জাহাজ সরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছে বন্দর কতৃপক্ষ। ইতোমধ্যে বন্দরের বর্হিনোঙ্গরে থাকা সকল লাইটার জাহাজ কর্ণফুলির উজানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আসন্ন ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’র কারণে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে নদী বন্দরগুলোতে সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। শনিবার রাত ১০টার পর ঢাকা নদী বন্দর থেকে অভ্যন্তরীণ নৌপথ চলাচলকারী সব লঞ্চ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাব মোকাবিলায় চট্টগ্রাম বন্দরের নিজস্ব দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩ নম্বর সংকেত দেওয়া হয়েছে। বন্দরের বহির্নোঙরে পণ্য উঠানো-নামানো এবং মূল জেটিতে পণ্য ও কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং বন্ধ ঘোষণা করেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখানোর পরপরই বন্দর কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নেয়।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, ৩ নম্বর সংকেতের নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে, বন্দরের বহির্নোঙরে পণ্য খালাস বন্ধ করা হয়েছে এবং সব জাহাজকে গভীর সমুদ্রে যেতে বলা হয়েছে। বড় সব জাহাজকে বহিরনোঙরে চলে যেতে বলা হয়েছে আর ছোট জাহাজকে শাহ আমানত সেতুর উজানে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।
এদিকে, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সন্ধ্যা থেকে বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকা ও উপকূলে মাইকিং করে মানুষকে নিরাপদে থাকার অনুরোধ জানাচ্ছে। বিশেষ করে নগরীর বায়েজিদ, বাটালী হিল, লালখানবাজার, ষোলশহরসহ বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের অবিলম্বে সরে যেতে বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসন ৭৮৫ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছে।
এর আগে শনিবার রাতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে দেশের চারটি সমুদ্র বন্দরের ওপর সতর্ক সংকেত বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি) জানায়, বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করা গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় রিমালে পরিণত হয়েছে। যা সর্বোচ্চ ক্যাটাগরি-১ শক্তিমাত্রার ঝড় হিসেবে আজ রাত থেকে ২৭ মে সকালের মধ্যে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।