ছাত্রদের উদ্দেশ্যে ইজতেমার বিশেষ বয়ান

মুহাম্মদ ইমরান হোসাইন:

আল্লাহ তায়ালা যখন কোন জাতি বা সম্প্রদায়কে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে চান। ইতিহাস সাক্ষী তখন তাদের মাঝে কোন ডাক্তার  বা কোন দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার পাঠান না, তবে তাদের মাঝে তিনি পয়গম্বর প্রেরণ করেন। যারা পথভোলা জাতিকে দ্বীন ও ইসলামের দাওয়াত দিয়ে সঠিক পথের দিশা দেখান। একই ধারার সর্বশেষ পয়গম্বর হিসেবে নবী মুহাম্মদ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আল্লাহ তা’আলা এ জাতির মাঝে প্রেরণ করেন। সর্বশেষ নবীর ওফাতের পর এ জাতির পথপ্রদর্শক হিসেবে আল্লাহ তা’আলা ওলামা- তলাবাদেরকে বিশেষভাবে মনোনীত করেছেন। 

আমাদের সামনে বর্তমান ইসলাম সাহাবায়ে কেরাম রাযি. বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শিখেছেন। এ জাতির সর্বপ্রথম ছাত্রসমাজ হল সাহাবায়ে কেরাম। তারা প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে দিন শিখে যদি দাওয়াতের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে না পড়তেন, তাহলে আমরা আজ ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় পেতাম না। ওলামায়ে কেরাম বলেন, সাহাবারা দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে একশত সফর করেছেন। মদিনায় ইসলামের দাওয়াত পৌঁছানোর পর তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে একজন দাঈী পাঠানোর আবেদন করেন। সে মতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত মুসা বিন উমাইর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুকে মদিনায় প্রেরণ করেন। যিনি একজন ক্বারী, একজন আলেম, একজন দাঈ ছিলেন। দুনিয়ার জিনিসপত্র দ্বারা মানুষের প্রয়োজন পূরণ করার চেয়ে সাধারণ মানুষের নিকট দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে যাওয়া অতীব জরুরী। কেননা, ইলমে দ্বীনের উপর আখেরাত নির্ভরশীল। ইমাম শফি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, “তোমরা মানুষের কাছে এলেম সহ দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে যাও, কেননা যেমনভাবে প্রবাহমান পানি নাপাকি দূর করে, ঠিক তেমনি ভাবে এলমসহ দ্বীনের দাওয়াত ঈমানকে পরিশুদ্ধ করে”।

  পরিশেষে ছাত্র সমাজের প্রতি উদার্ত আহ্বান জানিয়ে বলেন, দ্বীনের জ্ঞান শেখার পর হরকত করা অতীব ও প্রয়োজন। হরকত না হলে নেজাম ঠিক থাকে না। সূর্য যদি তার কক্ষপথে হরকত তথা ঘুরা বন্ধ করে দেয়, তাহলে পৃথিবীর সব নিজাম পরিবর্তন হয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। ঠিক তেমনিভাবে আমরা যদি ইলমে দ্বীন অর্জনের পর হরকত না করি তাহলে এ জাতির ইমান ও আমল বিপর্যয়মুখী হয়ে পড়বে। সুতরাং আমরা মাদ্রাসা চলাকালীন ইলমে দ্বীন অর্জন করব। পাশাপাশি বন্ধকালীন সময়ে ইলমসহ দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে বিপথগামী উম্মতের কাছে যাব। কেননা এটাও দ্বীনের একটা অংশ। ইলমে দ্বীন ও দ্বীনের দাওয়াত এক ও অভিন্ন বিষয়।