জমিয়ত ঢাকা মহানগর উত্তরের কাউন্সিল সম্পন্ন 

নিজস্ব প্রতিবেদন

২৯ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার)  সকাল ১০ টা থেকে  ঢাকা জেলা ক্রীড়া সংস্থা মিলনায়তন মতিঝিলে মাওলানা নূর মোহাম্মদ কাসেমীর সঞ্চালনা ও মাওলানা মকবুল হোসাইন কাসেমীর সভাপতিত্বে  জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। 

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ বলেছেন: মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা তাদের জীবনের সর্বক্ষেত্রে স্বীয় ধর্ম ইসলামকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন। দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও অধিকাংশ শিক্ষক-শিক্ষার্থী  মুসলিম হওয়ায় জাতীয় শিক্ষা কারিকুলামেও  ‘ইসলাম শিক্ষা’ অগ্রাধিকার পাওয়ার দাবী রাখে। অথচ আজ পাঠ্যপুস্তকে এই ইসলাম শিক্ষাকে গুরুত্বহীন করা হয়েছে। অন্যদিকে পাঠ্যপুস্তকে ঈমানবিরোধী গল্প,রচনা ও কবিতা যুক্ত করে মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্মগত ঈমানী চেতনাকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা আজ পরিস্কার ভাষায় বলছি: এই ভয়ংকর পরিকল্পনার পরিণতি কখনোই শুভ হবে না। নেতৃবৃন্দ সরকারকে জনগণের মনের ভাষা বুঝার আহবান জানিয়ে আরো বলেছেন: ভোটাধিকার ও বাকস্বাধীনতাসহ গণমানুষের সকল মৌলিক অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমাদের ইতিপূর্বেকার দাবী-দাওয়া ও প্রস্তাবনাসমুহ মেনে নিতে হবে। 

অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর উত্তরের পক্ষ থেকে ৭ দফা দাবি পেশ করা হয়।  দাবিগুলো হচ্ছে: 

১/ দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির ক্ষেত্রে যথার্থ ভূমিকা পালন করত; দ্রব্যমূল্যকে ক্রয় ক্ষমতার ভিতরে নিয়ে আসার জন্য সরকারের কাছে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

২/ জাতীয় শিক্ষাক্রমে ইসলাম ও মুসলমানদের ঐতিহ্য মুছে ফেলার চক্রান্ত বন্ধ করতে হবে।

৩/ কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে।

৪/ সীমান্ত রক্ষাসহ পার্বত্য অঞ্চলের স্বকীয়তা বহাল রাখতে হবে,  সাথে সাথে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুদৃঢ় করতে হবে।

৫/ আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য করে ঘড়ে তোলার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। 

৬/ জমিয়ত নেতৃবৃন্দসহ কারাবন্দী উলামায়ে কেরামের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। 

৭/ জঙ্গিবাদের নামে কওমি মাদরাসাসমূহে অযাচিত নজরদারি বন্ধ করতে হবে এবং সকল ধরনের হয়রানী বন্ধ করতে হবে।

সদস্য সম্মেলন ও কাউন্সিলে  প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক। প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস তালুকদার, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জমিয়তের সভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস কাসেমী, সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া। অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় যুগ্মমহাসচিব মাওলানা লোকমান মাযহারী,  সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী আফজাল হোসাইন রহমানী, মাওলানা তৈয়বুর রহমান চৌধুরী, অর্থ সম্পাদক মুফতী জাকির হোসাইন কাসেমী, প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদীন, কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মুফতী জাবের কাসেমী, কেন্দ্রীয় যুব বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক মুফতী বশীরুল হাসান খাদিমানী, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মুফতী মাহবুবুল আলম, মাওলানা নূরুল আলম ইসহাকী, মাওলানা আখতারুজ্জামান, মাওলানা ওমর আলী, যুব জমিয়ত বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ইসহাক কামাল, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সভাপতি এখলাসুর রহমান রিয়াদ, মুফতী আনীসুর রহমান, মাওলানা সাইফুর রহমান, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা বিনয়ামীন, মাওলানা ফখরুল ইসলামসহ বিভিন্ন থানা থেকে আগত কাউন্সিলরবৃন্দ।

কাউন্সিলে আগামী ৩ বছর মেয়াদের জন্য শাইখুল হাদীস মাওলানা মকবূল হোসাইন কাসেমীকে সভাপতি, শাইখুল হাদীস মাওলানা লোকমান মাজহারীকে সিনিয়র সহ-সভাপতি, শাইখুল হাদীস মাওলানা নূর মোহাম্মদ কাসেমীকে সাধারণ সম্পাদক  ও মাওলানা জাবের কাসেমীকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ৬১ সদস্যবিশিষ্ট জমিয়ত ঢাকা মহানগর উত্তরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি আগত কাউন্সিলরদের কন্ঠ ভোটে অনুমোদিত হয়।