ঝিনাইদহে স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যার ঘটনায় মো. সুজনকে (৩৫) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। দণ্ডপ্রাপ্ত সুজন শৈলকূপা উপজেলার দোহা-নাগিরাট গ্রামের মো. বিশ্বের ছেলে।
সোমবার দুপুরে অতিরিক্ত দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক আব্দুল মতিন এ রায় দেন। রায়ের বিবরণে জানা যায়, ঘটনার ছয় বছর আগে (আদালতে অভিযোগ দায়েরের ৬ বছর আগে) ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার নোন্দীরগাতী গ্রামের সালেহা বেগমের কন্যা ইয়াসমিন এর বিয়ে হয় মো. সুজনের সাথে।পরে তাদের ঘরে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়।
এরপর থেকেই সুজনের পরকীয়া নিয়ে স্ত্রীর সাথে ঝগড়া-বিবাদ হতো। এরই জেরে সুজন তার স্ত্রী ও সন্তানকে শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। কিছুদিন পরে সুজন অন্যদের সাথে নিয়ে স্ত্রী ও সন্তানের সাথে বিবাদে জড়াবে না বলে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসে।
এর ১৫ দিন পর ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১৮ তারিখ থেকে তাদের কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। তাই সুজনের পরিবারের কাছে জানতে চাইলে তারা জানায় ওরা বেড়াতে গেছে। কিছুদিন পর সুজনের বাড়িতে গিয়ে কাউকেই পাওয়া যায় না।
পরে ঝিনাইদহ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে ওই বছরেরই মার্চ মাসের ২২ তারিখে তাদের পাওয়া যাচ্ছে না মর্মে অভিযোগ দায়ের করে ইয়াসমিন এর মা সালেহা বেগম। পরে আদালত সেটি এজাহার হিসাবে গণ্য করে।
আদালতের নির্দেশে শৈলকূপা থানা পুলিশ জানতে পারে সুজন শেখ ফরিদপুর জেলার সদরপুর থানার মৈজদ্দি-মাতব্বরকান্দি গ্রামে আত্মগোপনে রয়েছে। সেখানে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সুজন স্বীকার করে যে তার স্ত্রী ইয়াসমিনকে ফরিদপুর জেলার পদ্মানদীর তালুকের চরে শ্বাসরোধ করে এবং ছেলে ইয়াসিনকে গলা টিপে হত্যা করে বালিচাপা দিয়ে রেখেছে।
পরবর্তীতে পুলিশ ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসের ১ তারিখ আদালতে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। সেই মামলার শুনানি শেষে আদালত সুজনকে স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করে।