পাকিস্তান নৌবাহিনীর জন্য বিশেষ রণতরী বানানোর মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান।
শুক্রবার ইস্তাম্বুল শিপইয়ার্ডে পিএনএস খাইবার রণতরীটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক মজবুত করার ঘোষণাটি দেন। এসময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পিএনএস খাইবার হলো পাকিস্তানের জন্য তুরস্কের বানানো চারটি যুদ্ধজাহাজের তৃতীয়টি। এরদোগান বলেন, ‘ইতিহাস, বন্ধুত্ব ও উন্নয়নের ওপর ভিত্তি করে কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গী থেকে দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক দিন দিন মজবুত হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘প্রতিরক্ষা শিল্প হলো সহযোগিতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ।’ এ সময় শাহবাজ শরিফ বলেন, তুরস্ক ও পাকিস্তানের এই প্রতিরক্ষা সহযোগিতা শান্তির জন্য, কোনো যুদ্ধ বিগ্রহের জন্য নয়। তিনি এরদোগান ও তুরস্কের জনগণকে ধন্যবাদ জানান কঠিন সময়ে পাকিস্তানের পাশে থাকার জন্য। পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট তৈমুর ফাহাদ খানের মতে, এগুলো প্রযুক্তিগতভাবে পাকিস্তান নৌবাহিনীর নৌবহরের জন্য সবচেয়ে অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজ। তিনি বিশ্বাস করেন যে এই যৌথভাবে নির্মিত তুর্কি যুদ্ধজাহাজগুলো পাকিস্তান নৌবাহিনীর সবচেয়ে অত্যাধুনিক অস্ত্র, যা পাকিস্তানের সামুদ্রিক নিরাপত্তা সক্ষমতা বাড়াতে এবং সিন্ধু ও বেলুচিস্তানের উপকূলীয় সীমান্তে উল্লেখযোগ্য নিরাপত্তা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণিত হবে। তৈমুর বলেন, এটি প্রতীকীভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং একই সাথে এই প্রকল্পটি দুটি মুসলিম দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক বন্ধুত্ব এবং ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্কের একটি উদাহরণ। তুরস্কের ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন শেহবাজ এবং ইস্তাম্বুলে অবস্থানকালে তিনি ইকো ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (ইটিডিবি) প্রেসিডেন্টের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন। শেহবাজ শরিফ তুর্কি প্রেসিডেন্টকে পাকিস্তানে বিনিয়োগের জন্য আমন্ত্রণ জানাবেন, বিশেষ করে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর সম্পর্কিত প্রকল্পগুলোতে। এই যুদ্ধজাহাজগুলো সামরিক নজরদারি, গোয়েন্দা মিশন, আগাম সতর্কতা, সাবমেরিন এবং অন্যান্য মিশনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য মোতায়েন করা যেতে পারে। মুখপাত্র বলেন, এমআইএলজিইএম প্রকল্পটি দুই দেশের যৌথ সহযোগিতার ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে এবং পাকিস্তান ও তুরস্কের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক চিহ্নিত করে, যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তৈমুর ফাহাদ খান পাকিস্তান ও তুরস্কের মধ্যকার সম্পর্ক নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। তিনি বলেন, পাকিস্তান নৌবাহিনীর জন্য এমআইএলজিইএম যুদ্ধজাহাজ নির্মাণের প্রকল্পটি ২০১৮ সালে একটি তুর্কি সংস্থাকে দেওয়া হয়েছিল। গত বছরের আগস্টে ইস্তাম্বুলে প্রকল্পটির প্রথম যুদ্ধজাহাজ পিএনএস বাবরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় যুদ্ধজাহাজ পিএনএস বদর ২০২২ সালের মে মাসে করাচিতে উদ্বোধন করা হয়েছিল। ডেইলি সাবাহ, আনাদোলু।