থানায় হামলা, পুলিশসহ আহত ৩০

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় মোস্তাক শিকাদার নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে ছাড়িয়ে নিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে পুলিশসহ ৩০জন আহত হয়েছে। এ সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও থানা ভাঙচুরের চালাতে থাকে হামলাকারীরা। রোববার বিকেল ৩টার দিকে শৈলকুপা থানায় এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকালে ৮নং ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের একটি হামলার ঘটনায় এজাহারভ’ক্ত আসামি মোস্তাক শিকাদারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

মোস্তাক শিকদারের কয়েক’শ সমর্থক তাকে ছাড়িয়ে নিতে থানায় হামলা চালায়। পুলিশ হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি চালায়। ১০ মিনিটের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ইটপাটকেলের আঘাতে পুলিশ কনস্টেবল ফিরোজ, হাসান, সোহান, ইমরান গুরুতর আহত হন। আহত পুলিশ সদস্যদের শৈলকুপা ও ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়লে আনুমানিক ২০/২৫ জন হামলাকারী আহত হন। আহতদের মধ্যে হাসানুজ্জামান, সাত্তার শিকদার, সাইফুদ্দীন, সোনা মিয়া, জালাল উদ্দীন, আব্দুল ওহাব, ইমরান, ফারুক হোসেন, তুহিন, নাফিজ, সালামত, ইমন, এস এম রিয়াজুল, মুইম, জান্নাত হোসেন, আসাদুজ্জামান, ইমন শিকদার, ফিরোজ শিকদার, আলী আকবর, বায়োজিদ হোসেন. আজগার মন্ডল ও হারুন শিকদার। তাদের বাড়ি শৈলকুপা উপজেলায়। হামলাকারীরা সবাই নব-নির্বাচিত শৈলকুপা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা আরিফ রেজা মন্নু ও সংসদের উপ-নির্বাচনে বিজয়ী নায়েব আলী জোয়ারদার এমপির সমর্থক। মোস্তাক শিকদার ৮নং ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের মৃত আব্দুস সাত্তার শিকদারের ছেলে।

শৈলকুপা উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি আব্দুর রহমান রিংকু অভিযোগ করেন, পুলিশ তাদের ওপর বেআইনি ও অন্যায়ভাবে হামলা করেছে। পুলিশের গুলিতে ৩০/৩৫ জন আহত হওয়ার দাবিও করেন তিনি।

হামলার ঘটনায় নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা আরিফ রেজা মন্নু বলেন, তিনি ঘটনার কোনো কিছুই জানেন না। হামলার সময় তিনি ঝিনাইদহে অবস্থান করছিলেন।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) ইমরান জাকারিয়া জানান, এজাহার নামীয় আসামি মোস্তাক শিকদারকে রোববার দুপুরে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পরপরই আসামির পক্ষে কয়ে’শ উচ্ছৃঙ্খল জনতা তাকে ছাড়িয়ে নিতে জোটবদ্ধভাবে থানায় হামলা চালায়। এ সময় তারা থানার প্রধান ফটক খুলে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। পুলিশ তাদের বাধা দিলে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ নিজেদের জানমাল ও সরকারি সম্পদ রক্ষায় বাধ্য হয়ে শর্টগানের গুলি ছোড়ে। তবে পুলিশ কত রাউন্ড গুলি ছুড়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে তিনি জানাতে পারেননি।

এদিকে গত শুক্রবার স্থানীয় এমপি নায়েব আলী জোয়ারদার ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা আরিফ রেজা মন্নুর উপস্থিতিতে শৈলকুপা পৌরসভার মেয়র কাজী আশরাফুল আজম থানার ওসি সফিকুল ইসলাম চৌধুরীকে গলায় গামচা পেঁচিয়ে থানা থেকে বিতাড়ন করার হুমিক দেন। তার এই হুমকীর দুইদিন পর থানায় এই হামলার ঘটনা ঘটলো।