![](https://poygam24.com/wp-content/uploads/2022/12/20221227_183214-1024x576.jpg)
—আব্দুল্লাহ আল মামুন
ইংরেজি নববর্ষের সূচনা—ইতিহাসের তথ্য অনুযায়ী খৃষ্টপূর্ব ৪৬ সালে। জুলিয়াস সিজার সর্বপ্রথম নববর্ষ প্রচলন শুরু করেন। প্রাগরিয়ানের ক্যালেন্ডার প্রবর্তনের পর ১৫৮২ সালে ১লা জানুয়ারিকে পরিপূর্ণভাবে নববর্ষের দিন হিসেবে নির্ধারণ করা হয়।
থার্টি ফাস্ট নাইট কি?
“থার্টি ফার্স্ট নাইট” ইংরেজি শব্দ। থার্টি অর্থ ত্রিশ। ফার্স্ট অর্থ প্রথম এবং নাইট অর্থ রাত। অর্থাৎ থার্টি ফাস্ট নাইট অর্থ একত্রিশ-এর রাত। ইংরেজি নতুন বর্ষকে বরণ করার লক্ষে এই দিবস পালন করা হয়। বিভিন্ন দেশে এই দিনটিতে পাবলিক হলিডে (সাধারণ ছুটির দিন) পালন করা হয়। বাংলার মানুষ থার্টি ফাস্ট নাইট কেন পালন করবে?
৩১শে ডিসেম্বর মধ্যরাতে নববর্ষের নামে বাঙালি মুসলমানসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মুসলমানরা বেহায়াপনা, বেপর্দা আর মাতলামির আনন্দে মেতে ওঠে।
বাংলাদেশের ৯৫ ভাগ মানুষ ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী। আর বাংলাদেশের সংবিধানে আছে, “আমাদের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। ইসলামে কোন প্রকার বিজাতীয় কালচার কিংবা অপসংস্কৃতি উদযাপনের অনুমোদন নেই”। ইসলামের কথা না হয় পরে বলি, সচেতন বাঙালিদের বিবেকে এটা কিভাবে সাড়া দেয়, থার্টি ফার্স্ট নাইট কি আমাদের বাঙালি সংস্কৃতিতে আছে? যদি না থাকে, তাহলে কেন ৩০লাখ শহীদদের পবিত্র খুনে আঁকা সবুজ এই ভূমিতে থার্টি ফার্স্ট নাইট এবং নববর্ষের নামে নির্লজ্জ প্রদর্শনীর আয়োজন? আমাদের নিজেদের তো সন আছে‚ বাংলা ক্যালেন্ডার আছে‚ তবে কেন সেই ব্রিটিশদের ইংরেজি সন নিয়ে এতো মাতামাতি, আনন্দ-উল্লাস? থার্টি ফার্স্টসহ ইসলাম বিরোধী কোনো কাজ ৯৫ ভাগ মুসলমানের দেশে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে কিভাবে পালন হতে পারে!
মোটকথা, থার্টি ফার্স্ট নাইট হল, বিজাতীয় বিধর্মীদের অনুসরণ। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন: إِنَّ ٱلدِّينَ عِندَ ٱللَّهِ ٱلْإِسْلَٰمُُۗ নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট একমাত্র মনোনীত ধর্ম হচ্ছে ইসলাম”।
এ ব্যাপারে আল্লাহর রাসূলের বক্তব্য; হযরত জাবির রাযি. রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন—একদিন উমর ইবনুল খাত্তাব রা. নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বললেন‚ হে আল্লাহর রাসূল! আমরা ইহুদীদের থেকে কিছু ধর্মীয় কথা শুনে থাকি‚ যাতে আমরা আশ্চর্যবোধ করি। এর কিছু লিখে রাখবো কি? আল্লাহর রাসূল বললেন, তোমরাও কি দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছ? যেরকম ইয়াহুদী নাসারা দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে? অবশ্যই আমি পরিপূর্ণ উজ্জ্বল ও স্পষ্ট ধর্ম নিয়ে এসেছি। বাংলাদেশের সংবিধানের ৩ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রভাষা বাংলা। সে প্রেক্ষিতে অন্যান্য ধর্ম ও ধর্মাবলম্বীদের উপর ইসলাম ও মুসলমানদের মর্যাদা ও প্রাধান্য স্বীকৃত হওয়া আবশ্যকের দাবিদার। তাই থার্টি ফার্স্ট নাইটের মতো অসাংবিধানিক সাংস্কৃতিক আগ্রাসন রোধে কার্যকারী ভূমিকা পালন করা দরকার।
তাই আসুন! আমরা বাস্তবতাকে সামনে রেখে অপসংস্কৃতিসহ সকল অনৈসলামিক কর্মকান্ড ও টাকা অপচয়ের বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে আসি এবং আমার কাছের বন্ধুটিকেও এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখি।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে বুঝার ও মানার তাওফিক দান করুন, আমিন।
শিক্ষার্থী
জামিয়া হোসাইনিয়া ইসলামিয়া আরজাবাদ