দিল্লিতে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো সুলতানা রাজিয়ার আমলের মসজিদ

দিল্লিতে কয়েক শতকের পুরনো আখুঞ্জি মসজিদ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গত ৩০ জানুয়ারি ভোরে নয়াদিল্লির মেহেরাউলিতে অবস্থিত প্রাচীন মসজিদটি বুলডোজার দিয়ে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে দিল্লি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (ডিডিএ)। এ নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয় মুসলিমদের মধ্যে। মসজিদটি ভারতবর্ষের প্রথম নারী শাসক সুলতানা রাজিয়ার আমলের। খবর আল জাজিরা ও দি হিন্দু অনলাইনের।

আখুঞ্জি মসজিদের ইমাম জাকির হোসেন জানান, প্রতিদিনের মতো ৩০ জানুয়ারি ভোরে ফজরের নামাজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তবে ভোরের নীরবতা ভেঙে ‍শুনতে পান বুলডোজারের গর্জন। ঘর থেকে ছুটে আসেন মসজিদের দিকে। তবে তাকে বাধা দেয় সিআরপিএফ সদস্যরা। কয়েক হাজার সিআরপিএফ জওয়ান এলাকা ঘিরে রেখে মসজিদটি গুড়িয়ে দেয়।

ইমাম জাকির জানান, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দিল্লি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (ডিডিএ) কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে সিআরপিএফ আখুঞ্জি মসজিদ, সংলগ্ন বেহরুল উলূম মাদরাসাসহ পুরো প্রাঙ্গণ এবং প্রাচীন সমাধিস্থল ভেঙে ফেলে।

স্থানীয়রা জানান, ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ স্থাপনা কুতুব মিনার থেকে আধা কিলোমিটার দূরে অবস্থিত আখুনজি মসজিদ প্রায় ৭০০ বছরের পুরনো। ১৩ শতকে নির্মিত মসজিদটি সুলতানা রাজিয়ার আমলের। সুলতান ইলতুৎমিসের কন্যা সুলতানা রাজিয়া (১২০৪-১২৪০) ভারতবর্ষের প্রথম নারী শাসক ছিলেন।

এদিকে দিল্লি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, স্থাপনাটি অবৈধ। এটি বনভুমির জায়গা। সরকারের নথিতে এটি সংরক্ষিত কোনো ঐতিহাসিক স্থান বা স্থাপনা নয়।

তবে মসজিদ কমিটি জানিয়েছে, দিল্লি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দাবি মিথ্যা। এ স্থাপনা ও জমি নিয়ে আদালতের স্থগিতাদেশ রয়েছে। তবে সেটি না মেনেই তারা রাতের অন্ধকারে মসজিদটি গুড়িয়ে দেয়।

দিল্লির পুরাতত্ত্ব ও ইতিহাসবিদ সোইহাইল হাশমী বলেন, ১৯২০ সালে প্রকাশিত ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপে ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলোর তালিকায় আখুঞ্জি মসজিদের উল্লেখ রয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে মসজিদ কমিটি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। দিল্লি হাইকোর্ট ভারতের কেন্দ্রীয় ভূমি দপ্তরকে মসজিদটি গুড়িয়ে দেওয়ার কারণ জানতে তলব করেছে।