দুনিয়াতে যারা আসছেন তাদের সকলকে পরীক্ষা দিতে হবে। যারা বড় ছিলেন তাদেরকে আরও বড় পরীক্ষা দিতে হয়েছে। যারা ছোট তাদের ছোট পরীক্ষা কিন্তু দুনিয়াতে পরীক্ষা অবশ্যই অবশ্যই দিতে হবে।
উদাহরণস্বরূপ কোন ব্যক্তি যদি বাজারে কলস কিনতে যায় আর সেই কলসটা যদি পিতলের হয় তাহলে কলসে বাড়ি দিয়ে দেখে কলসটা মজবুত আছে কিনা।
মাটির কলসও যদি কিন্তে যায় বাজারে সেই মাটির কলসও বাড়ি দিয়ে দেখে সেটা ঠিক আছে কিনা।
কিন্তু পিতলের কলস যে পরিমাণ জোরে বাড়ি দেয় মাটির কলস কিন্তু সে পরিমাণ জোড়ে বাড়ি দেয় না।
ঠিক তদ্রূপ যারা বড় তাদেরকে আল্লাহ তা’আলা বড় পরীক্ষা নেন আর যারা ছোট তাদেরকে আল্লাহ তা’আলা দুর্বলতার কারণে ছোট ছোট পরীক্ষা নেন।
যেমন এক নবী আইয়ুব আলাইহিস সালাতু ওয়াসালাম যাকে আল্লাহ তাআলা পরীক্ষা দিয়েছেন অসুস্থতা দিয়ে। আইয়ুব (আ:) এর অসুস্থতা যখন অনেক বেড়ে গেল, তখন তাকে লোকালয় থেকে গ্ৰাম থেকে নিয়ে গিয়ে পাহাড়ের গুহায় রাখা হলো।
পাহাড়ের গুহাটা কেমন ছিল যেমন আজকাল মানুষ বেশি অসুস্থ হলে আইসিওতে রাখা হয়। যখন প্রিয় নবী আইয়ুব আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালামের অসুস্থতা বেড়ে গেল এবং তাকে পাহাড়ের গুহায় রাখা হলো তখন সকলেই তার থেকে দূরে সরে গেল তার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। তখন এলাকার লোক তো দূরের কথা তার সন্তানও তার সাথে ছিল না । শুধুমাত্র তার সাথে ছিল তার বিবি।
আইয়ুব আলাইহিস সাল্লাম ধৈর্য ধারণ করলেন। তখন আইয়ুব আলাইহিস সালাম বললেন হে আল্লাহ এই অসুস্থতা অনেক কষ্টদায়ক হে আল্লাহ তুমি আমাকে সুস্থতা দান করো। আল্লাহ তাআলার কাছে আইয়ুব আলাইহিস সালামের এই ধৈর্যধারণ অনেক পছন্দ হয়ে গেল সেই গুহার মধ্যে ঝর্ণা প্রবাহিত হয়ে গেল সেই ঝর্ণার পানি পান করলেন এবং আল্লাহ তাআলা তাকে সুস্থতা দান করলেন। আল্লাহ তাআলা আইয়ুব আলাইহিস সালামকে সবকিছু ফিরিয়ে দিলেন।
আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদেরকে এই দুনিয়াতে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছেন।
ইউসুফ আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম এর ঘটনা ইউসুফ আলাইহিসতু ওয়াসাল্লাম কে তার ভাইয়েরা কুয়াতে নিক্ষেপ করেছে, ইউসুফ আলাইহিস সালাম জেলখানায় ও বন্দী ছিলেন, এভাবে আল্লাহ তাআলা তার প্রিয় বান্দাদেরকে বড় বড় পরীক্ষা দিয়েছেন । ইউসুফ আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম ও ধৈর্য ধারণ করেছিলেন। আল্লাহ তাআলা তার গায়বি নিজামের মাধ্যমে সেই কুয়া থেকে মিশরের সিংহাসনে বসিয়েছেন।
দুনিয়াতে আল্লাহ তা’আলা তাঁর বান্দাদেরকে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছেন হযরত বলেন , নেক লোকদের পরীক্ষা হয় কষ্টের দ্বারা । এবং এর নতিজা এর ফলাফল অনেক উত্তম হয়। আমাদের কাছে খবর আসে, কারগুজারি আছে, এই তিন দিন ইজতেমার ময়দানে এসে আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসূলের মহব্বতে অনেকেই অনেক কষ্ট করছেন ।ইস্তিনজার সময় বিরাট লাইনে দাঁড়িয়ে কষ্ট করছেন।
অনেকেই এই কয়েকদিন বিনিদ্র অবস্থায় কাটাচ্ছেন। দুই তিনজনের স্থানে ৮/১০ জন ঘুমাচ্ছেন । যেখানে ২৫ জন লোক থাকার ব্যবস্থা সেখানে ৫০ জন ১০০ জন থাকছেন। আল্লাহতালার মহব্বতের জন্য আল্লাহ তাআলাকে পাওয়ার জন্য এইসব কষ্টকে মেনে নিয়েছেন।
এই যে আল্লাহ তাআলার বান্দারা এত কষ্ট করছেন এই সমস্ত কষ্টের প্রতিদান আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে আখেরাতে দান করবেন,আল্লাহ আমাদেরকে এই কষ্টের বিনিময়ে উত্তম প্রতিদান দান করবেন।
আর এই কষ্টের মধ্যে একটা সাধ আছে। একটা রুহানিয়াত আছে। এই কষ্টের মধ্যে যে কি মজা আছে কি স্বাদ আছে এটা যদি সকলেই জানতো তাহলে এই মজমার মধ্যে জায়গার সংকুলান হতো না ।
হযরত বলেন নেক লোকদের পরীক্ষা শুরু হয় কষ্টের দ্বারা । আর এটার পরিণতি যেটা হয় সেটা হচ্ছে সফলতার দ্বারা।
আর বাতিল যেটা সেটা শুরু হয় খুব আরামের দ্বারা খুব স্বাদের দ্বারা। আর এর পরিণতি হয় খুব কষ্টের মারাত্মক খারাপের দ্বারা।