আরব আমিরাতের দুবাইয়ে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধনাঢ্য ব্যক্তিরা। তাদের মধ্যে অন্তত ৩৯৪ বাংলাদেশি নাগরিকের ৬৪১টি বাড়ির সন্ধান মিলেছে দুবাইয়ে। সম্পত্তির এই মালিকানার তালিকায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের পাশাপাশি রয়েছেন চিহ্নিত অর্থ পাচারকারী ও অপরাধীরাও।
দুবাই আনলকড’ নামে একটি আন্তর্জাতিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা প্রকল্প মঙ্গলবার বাংলাদেশিদের পাশাপাশি দুবাইয়ে বাড়িগাড়িসহ সম্পত্তির মালিক হওয়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের তালিকা প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে ওসিসিআরপির ওয়েবসাইটে।
দুবাইয়ে সম্পদের বৈশ্বিক তালিকায় দেখা গেছে, দুবাইয়ে সবচেয়ে বেশি সম্পদ গড়ে তুলেছেন ভারতীয় নাগরিকরা। সেখানে ৩৫ হাজার বাড়ির মালিক ২৯ হাজার ৭০০ ভারতীয়। এরমধ্যে ভারতের ধনকুবের মুকেশ আম্বানির পরিবারের সদস্যরাও রয়েছেন।
তালিকায় পাকিস্তানিরা রয়েছেন দ্বিতীয় স্থানে । দেশটির ১৭ হাজার মানুষের মালিকানায় দুবাইয়ে ২৩ হাজার বাড়ি রয়েছে। এসব সম্পত্তির মূল্য ১ হাজার ২৫০ কোটি ডলার। তালিকায় পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি ছাড়াও সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ছেলে হুসাইন নওয়াজ এবং সাবেক সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়ার ছেলে সাদ সিদ্দিক বাজওয়ারের নাম রয়েছে।
তালিকায় বাংলাদেশি নাগরিকদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা না হলেও বাংলাদেশির সংখ্যা, সম্পদের পরিমাণ ও দাম তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, ৩৯৪ জন বাংলাদেশির ২ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকা মূল্যের ৬৪১টি বাড়ি রয়েছে দুবাইয়ে।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত এক নথিতে দেখা গেছে, আমিরাতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের মালিকানাধীন কোম্পানি হু হু করে বাড়ছে। ওই বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে দুবাই চেম্বার অব কমার্সে সদস্য পদ নিয়েছে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের মালিকানাধীন ১০৪৪টি কোম্পানি। এতে দুবাই চেম্বারে সদস্য বাংলাদেশি কোম্পানির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৯৭৫টিতে।
এ অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার সমন্বয় করেছে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট (ওসিসিআরপি) ও নরওয়ের গণমাধ্যম ই-টোয়েন্টিফোর। দুবাইয়ের ভূমি দপ্তরসহ বেশ কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠানের তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এ অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এতে ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত তিন বছরে বিদেশিদের সম্পদের মালিকানার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
দুবাইয়ে গোপনে সম্পদ গড়া ব্যক্তিদের এ তালিকায় যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, মিশর, সাইপ্রাসের পাশাপাশি যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের অন্তত সাত নাগরিকের নাম রয়েছে। তালিকায় রাশিয়া ও ইউক্রেনের পাশাপাশি ইয়েমেন, নাইজেরিয়া ও কেনিয়ার মতো দেশের নাগরিকও আছেন। রয়েছেন মিয়ানমারের একজন অস্ত্র ব্যবসায়ীও।