ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই ভেসে আসছে আজান, হচ্ছে জামাত, চলছে তেলাওয়াত

বাড়ি-স্কুল কোনো কিছুতেই ভেদাভেদ করা হয়নি। গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে মসজিদগুলোও। তবুও যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় থামেনি আজান, বন্ধ হয়নি নামাজ। কেউ কেউ আবার আগের মতোই মসজিদে এসে কোরআন তেলাওয়াতে মগ্ন। খবর আনাদোলু।

গত অক্টোবর থেকে গাজায় চলমান ইসরায়েলি বাহিনী হামলায় বহু মসজিদ ধ্বংস হয়ে গেছে। মসজিদের অবকাঠামো এখন বিলুপ্ত। চারপাশে পড়ে আছে ধ্বংসাবশেষ। তবে এর মধ্যেই ফিলিস্তিনিরা ইবাদতের জন্য জায়গা করে নিচ্ছে। হামলার হুমকি থাকা সত্ত্বেও প্রতি ওয়াক্তেই সময়মতো শোনা যাচ্ছে আজানের সুর।

এখন থেকে অর্ধশত বছর আগে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে তৈরি করা হয়েছিল আল-আওদা মসজিদ। এতে ছিল সুউচ্চ মিনার। ইসরায়েলি হামলায় এই মসজিদটির এখন কোনো অস্তিত্ব নেই।প্রতি বছর রমজান আসলে মসজিদটিতে আলোকসজ্জা করা হতো। মাগরিবের সময় শত শত মুসল্লির জন্য ইফতারের আয়োজন করা হতো। অভাবীদের খাবার দেওয়া হতো। তারাবিহর সময় মুসল্লিদের আগমনে সরগরম থাকতো পুরো মসজিদ প্রাঙ্গণ। কিন্তু এবারের রমজানে পরিস্থিতি ভিন্ন। কোনোমতে নামাজ আদায় করাই এখন সবচেয়ে বড় প্রাপ্তির বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ওই মসজিদের কাছেই বাড়ি ছিল আওয়াদ শুরাফা নামের এক ৫৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তির। পূর্বের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, আমরা মসজিদ সজ্জিত করতাম। রোজার মাস উদযাপন করতাম। রমজানে মুসল্লিদের ভিড়ে সরগরম থাকত মসজিদ। কিন্তু যুদ্ধের কারণে সব হারিয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, দখলদার বাহিনী সর্বত্র ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, আমাদের বাড়িঘর ও মসজিদ গুঁড়িয়ে দিয়েছে, ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত ও হত্যা করছে, রমজানের আনন্দকে নষ্ট করে দিয়েছে।

একই রকম পরিণতি হয়েছে গাজা শহরের তুফাহ পাড়ার আল-মাহাত্তা মসজিদটিরও। ইসরায়েলি হামলায় মসজিদটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। তারপরও সেই ধ্বংসস্তূপের মধ্যে থেকে নামাজের আযান অব্যাহত রয়েছে। ২৩ বছর বয়সী ইয়াসির হাসসুনা শঙ্কাবিহীন চিত্তে প্রতি ওয়াক্তেই মসজিদে যান। ইসরায়েলি হুমকি উপেক্ষা করে আজান দেন এবং সেখানে কোরআন তেলাওয়াত করেন।