
ফিলিস্তিনিরা দীর্ঘ ১৫ মাস পর নিজেদের বাড়ি উত্তর গাজায় ফিরছেন। মূলত ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস আরও ছয় জিম্মিকে মুক্তির বিষয়ে নিশ্চয়তা দেওয়ার পর ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের উত্তর গাজায় ফেরার অনুমতি দেয়।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায় সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। এর আগে শনিবার (২৫ জানুয়ারি) হামাস প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় দফায় চার ইসরায়েলি নারী সেনাকে মুক্তি দেয়। এর বিনিময়ে ২০০ ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে মুক্তি দেয় ইসরায়েল। এরপর ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে।
ইসরায়েল বলছে, হামাসের হাতে জিম্মি বেসামরিক ইসরায়েলি আরবেল ইয়াহুদের মুক্তির যে পরিকল্পনা, সেটি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত গাজার বাসিন্দাদের উত্তর দিকে যেতে দেওয়া হবে না। পরে রোববার আরও ছয় ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তির নিশ্চয়তা দেয়।
এরপরই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, সোমবার থেকে ফিলিস্তিনিরা গাজার উত্তরাঞ্চলে ফেরা শুরু করতে পারবেন। যুদ্ধবিরতির পরই গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা নিজ নিজ বাড়িঘরে ফিরতে চাইছেন। এ জন্য তাদের নেটজারিম করিডর পার হয়ে আসতে হবে। কিন্তু ইসরায়েল সেখানে উপকূলীয় একটি মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছিলো। তারা উত্তর গাজায় ফিরতে চাওয়া ফিলিস্তিনিদের মহাসড়ক পার হতে দিচ্ছিলো না।
যদিও সোমবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে ফিলিস্তিনিদের পায়ে হেঁটে আল-রশিদ এবং সকাল ৯টা থেকে যানবাহনে সালাহ আল-দিনের করিডোর অতিক্রম করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে অনেকে এসব করিডোর অতিক্রম করেছে।
সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার সংবাদদাতা জানিয়েছেন, উত্তর গাজায় ফিরতে বাধা দেয়া হবে না ইসরাইলের এমন ঘোষণার পর নেটজারিম করিডোরের কাছে অপেক্ষারত হাজারো ফিলিস্তিনিরা আনন্দে ফেটে পড়েন। বাস্তুচ্যুত বাসিন্দারা এই মুহূর্তটিকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে উল্লেখ করেন। তাদের মতে, যুদ্ধবিরতি ঘোষণার মতোই আজকের দিনটি গুরুত্বপূর্ণ। এটিও তাদের জন্য একটি বিজয়ের দিন।
এসময় তীব্র উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে গাজাবাসীরা জানান, আজকের দিনটিকে ‘বিজয়ের দিন’। একজন ফিলিস্তিনি এসময় নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি আমার ঘর পুনর্নির্মাণ শুরু করব। আমরা ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে আবার নতুন করে তৈরি করব।’