বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধান সব কটি রাজনৈতিক দল অংশ না নেওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইইউর পক্ষে ইউরোপের ২৭ দেশের এই জোটের উচ্চপদস্থ প্রতিনিধি জোসেপ বোরেল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি নির্বাচনে অনিয়মের যেসব খবর এসেছে, সেগুলোর সময়োচিত ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদর দপ্তর থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন গত রবিবার বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত সংসদীয় নির্বাচনের ফলাফল লক্ষ্য করেছে। একই সঙ্গে ইইউ-বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারত্ব যে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসনের মূল্যবোধের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত, সে বিষয় পুনর্ব্যক্ত করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই নির্বাচনে প্রধান সব রাজনৈতিক দল অংশ নেয়নি বলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন হতাশা ব্যক্ত করছে।
জোসেপ বোরেল বিবৃতিতে বলেন, ‘ইইউ নির্বাচনবিশেষজ্ঞ মিশনের আসন্ন প্রতিবেদন এবং সুপারিশগুলো প্রকাশ করার জন্য কর্তৃপক্ষগুলোর মধ্যে হওয়া চুক্তিকে স্বাগত জানায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির একই চেতনায়, আমরা নির্বাচনে অনিয়মের যেসব খবর এসেছে, সেগুলোর সময়োচিত ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
বিবৃতিতে বলা হয় , ইইউ নির্বাচনকালে সংঘটিত সহিংসতার নিন্দা জানায় এবং নির্বাচন–পরবর্তী সময়ে সহিংসতা থেকে বিরত থাকার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। এই সময়কাল এবং এর পরবর্তী সময়ে আইনের শাসন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে, বিরোধী নেতা–কর্মীদের আটক অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
ইইউর উচ্চপদস্থ প্রতিনিধির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক বহুত্ববাদ, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের মানদণ্ডের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন এবং শান্তিপূর্ণ সংলাপে যুক্ত হওয়ার জন্য সব অংশীজনকে জোরালোভাবে উত্সাহিত করছে ইইউ। গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো ধরনের সেন্সরশিপ বা প্রতিশোধের ভয় ছাড়াই কাজ চালিয়ে যেতে পারার পরিবেশ থাকাটাও জরুরি।
রাজনীতি, মানবাধিকার, বাণিজ্য ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক যেসব অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে, সেগুলো নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করবে ইইউ। এর মধ্যে আগামীতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধা জিএসপি প্লাসে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টিও রয়েছে।