‘সাবধান হয়ে যান, নৌকায় আসেন না হয় এলাকা ছাড়েন’ কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত (নৌকা) প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালাতে গিয়ে প্রকাশ্যে এমনই হুমকি দিয়েছেন মোস্তফা কামাল মামুন নামের এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা।
তিনি ওই আসনের নবাবপুর ইউনিয়নের নাটেংগী গ্রামের বাসিন্দা এবং কুমিল্লা উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য। এরই মধ্যে ২১ সেকেন্ডের ওই বিতর্কিত বক্তব্যের ভিডিও ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার সন্ধ্যায় চান্দিনা উপজেলার নবাবপুর বাজারে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ডা. প্রাণ গোপাল দত্তের নির্বাচনী অফিসে নৌকার জন্য ভোট চেয়ে বক্তব্য দেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মামুন।
রাত থেকেই এ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়- ‘সাবধান হয়ে যান, এখনো সময় আছে নৌকাতে আসেন, না হয় এলাকা ছাড়েন। কারণ এলাকার কৃষক শ্রমিক জনতা মেহনতি মানুষ এক হয়ে গিয়েছে। ’
এ আসনে নৌকা থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ৫ বারের এমপি প্রয়াত অধ্যাপক আলী আশরাফের পুত্র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুনতাকিম আশরাফ টিটু।
তিনি অভিযোগ করেন, পুরো নির্বাচনি এলাকায় নৌকা সমর্থক নেতাকর্মীরা এক ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে গত ৫ দিনে তার অন্তত ১৫ থেকে ২০ জন নেতাকর্মীর ওপর হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত করেছে। থানায় অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার মিলছে না। প্রতিটি সভা-সমাবেশে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ‘নৌকা ছাড়া কোনো প্রতীকে ভোট দেয়ার সুযোগ নাই’ এমন কথা বলে এলাকায় মহড়া দিচ্ছে নৌকার লোকজন।
এদিকে বিতর্কিত বক্তব্য প্রসঙ্গে সোমবার সকালে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মামুন বলেন, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি তারই। তবে এখানে কিছু বক্তব্য এডিট করা হয়েছে, কথাটি অন্যভাবে বলেছিলাম। তিনি পথসভা শেষ করে আবারো এ বিষয়ে কথা বলবেন বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
কুমিল্লা উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক লিটন সরকারের ভাষ্য- মোস্তফা কামাল মামুন আমার পরিচিত। তিনি দলের কার্যনির্বাহী কমিটিতে নেই। সাধারণ সদস্য। প্রকাশ্যে এমন বক্তব্য দেওয়া ঠিক হয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাবের মো. সোয়াইব বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব প্রার্থীর লোকজনের মধ্যে সহনশীল আচরণ কাম্য, যা এখানে দেখছি না। ভিডিওটি পাওয়া গেছে, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।