পাকিস্তানে সামরিক আইন সম্ভব নয় : ইমরান খান

পাকিস্তানে রাজনৈতিক সংকট কেবলই বাড়ছে। অন্যদিকে সংকট যতই বাড়ছে ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে সামরিক আইন জারির শঙ্কা। তবে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান বলেছেন, দেশে সামরিক আইন জারি সম্ভব নয়। এমনকি সংবিধান না থাকলে কোনও দেশও আর থাকে না বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। সোমবার (৩ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার এক সাক্ষাৎকারে কথা বলেন ইমরান খান। সেখানে তিনি বলেন, দেশে সামরিক আইন জারি সম্ভব নয়। তিনি বলেন, জনগণ মেনে নেবে কি না সেই পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে সামরিক আইন জারি করা হয়। বিশ্বকাপজয়ী সাবেক এই তারকা ক্রিকেটার আরও বলেন, ‘জনগণ যদি আপনার সঙ্গে না থাকে, তাহলে আপনি কীভাবে সামরিক আইন জারি করবেন।’ পিটিআই প্রধান বলেন, যদি ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন না হয় তবে তারা আর সংবিধান অনুযায়ী চলবেন না। তার ভাষায়, ‘যদি সংবিধান (কার্যকর) না থাকে, তাহলে কোনও দেশও আর থাকে না।’

তিনি বলেন, তারা (সরকার) অপেক্ষা করছিল এই ভেবে যে, পিটিআই দুর্বল হয়ে যাবে অথবা ইমরান খানকে গ্রেপ্তার বা হত্যা করা হবে। তবে পরিস্থিতি খুবই খারাপ এবং নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থে মাফিয়ারা একসঙ্গে বিচার বিভাগকে ভাগ করার চেষ্টা করছে। পাকিস্তানে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে উল্লেখ করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশ রাজনৈতিক কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে এবং পরে তাদের সঙ্গে সন্ত্রাসীদের মতো আচরণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, মানুষ এখন সচেতন এবং নিজ স্বার্থে পরিস্থিতি ঘোলাটে করা এখন অসম্ভব।

গত ৩০ বছরে পিডিএম দলের শাসনামলে পাকিস্তান অর্থনৈতিকভাবে কেবলই নিচে নেমেছে এবং অন্যদিকে একইসময়ে ভারত ও বাংলাদেশ উন্নতি করেছে। ইমরান বলেন, আবার ক্ষমতায় গেলে তিনি শাসন ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করবেন এবং আমলাতন্ত্র ও বিচার ব্যবস্থায় সংস্কার আনবেন। তার ভাষায়, ‘আমি নেলসন ম্যান্ডেলার মতো সত্য ও পুনর্মিলনের ধারণা গ্রহণ করব।’ ইমরান বলেন, পিটিআই যদি আবার ক্ষমতায় আসে, তবে পাকিস্তানে বিনিয়োগ আনার নতুন উপায় খুঁজে বের করা হবে এবং এক্ষেত্রে প্রবাসী পাকিস্তানিদের বাড়তি সুবিধা দেওয়া হবে। তিনি বলেন, তারা ব্যয় হ্রাস করবেন এবং শাসন ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য সমস্ত প্রচেষ্টাকে কাজে লাগাবেন।

পিটিআই সরকারের অর্থমন্ত্রী কে হবেন এমন আরেক প্রশ্নের জবাবে ইমরান বলেন, পিডিএম ব্যর্থ হয়েছে কিন্তু শওকত তারিনই হবেন পরবর্তী অর্থমন্ত্রী। পাঞ্জাবের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত তার কোনও ধারণা নেই। ইমরান খান বলেন, তার সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন দেশের অর্থনীতির উন্নতি হচ্ছিল কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। তার ভাষায়, ‘আমি দ্বিধা নিয়েই জেনারেল বাজওয়াকে সুবিধা দিতে থাকি কিন্তু পরে আমি বুঝতে পারি, তিনিই আমার এবং আমার সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের পেছনে ছিলেন।