পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু প্রতিরোধ; এখনো কাজ শুরু করেনি বাংলাদেশ শিশু একাডেমি

দেশে দৈনিক গড়ে ৫০ জন পানিতে ডুবে মারা যায়, যার মধ্যে ৪০ জনই শিশু। পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু কমাতে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ শিশু একাডেমির অধীনে ‘ইন্ট্রিগ্রেটেড কমিউনিটি বেইসড সেন্টার ফর চাইল্ড কেয়ার, প্রটেকশন অ্যান্ড সুইম সেফ ফ্যাসিলিটিজ’ প্রকল্প অনুমোদন দেয় সরকার। প্রকল্পটি গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি একনেকে অনুমোদিত হয়। তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পটির এক বছরের বেশি সময় চলে গেলেও এখনো কাজই শুরু করতে পারেনি প্রকল্পটির দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ শিশু একাডেমি।

আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ সমীক্ষা অনুযায়ী, বাংলাদেশে পাঁচ বছরের কম (০ থেকে ৫৯ মাস) বয়সের শিশুমৃত্যুর অন্যতম কারণ পানিতে ডুবে যাওয়া। বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভে (বিডিএইচএস) ২০১৭-১৮-এর তথ্য অনুযায়ী, এক থেকে চার বছর বয়সের শিশু মৃত্যুর প্রধান কারণ পানিতে ডুবে যাওয়া। কিন্তু এই মৃত্যু স্থানীয় ব্যবস্থাপনায় কম খরচে প্রতিরোধযোগ্য, যা গবেষণায় প্রমাণ করেছে সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি)।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭১ কোটি ৮২ লাখ টাকা। যার ৮০ শতাংশ বহন করবে বাংলাদেশ সরকার, ২০ শতাংশ বহন করবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রোপিজ এবং যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান রয়াল ন্যাশনাল লাইফবোট ইনস্টিটিউশন। শিশু একাডেমির তত্ত্বাবধানে প্রকল্পটি দেশের ১৬টি জেলার ৪৫টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হবে। এই প্রকল্পের আওতায় এক থেকে পাঁচ বছর বয়সী দুই লাখ শিশুর জন্য প্রকল্প এলাকায় আট হাজার সমাজভিত্তিক শিশু যত্ন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে ২৫ জন শিশুকে ভর্তি করা হবে। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত শিশুরা ওই কেন্দ্রে থাকবে। কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন ১৬ হাজার গ্রামীণ নারী। এক হাজার ৬০০ স্থানে ছয় থেকে ১০ বছর বয়সী তিন লাখ ৬০ হাজার শিশুকে সাঁতার শেখানো হবে।

বাংলাদেশ শিশু একাডেমির শিশু ও প্রারম্ভিক বিকাশ (ইসিডি) বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও প্রকল্পের পরামর্শক মো. তারিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘প্রকল্পের এনজিও সিলেকশনের জন্য আগামী মাসে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে খুব দ্রুতই এনজিও সিলেকশনের কাজটিও করে ফেলব বলে আশা করছি। এরপর আগামী জুলাই মাস থেকে এই প্রকল্পের মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন ব্যাপকভাবে শুরু করা যাবে।’ জানতে চাইলে সিআইপিআরবির উপনির্বাহী পরিচালক আমিনুর রহমান বলেন, ‘প্রকল্পের কাজটি কিছুটা দেরি হলেও আমরা চাই কাজটি সুষ্ঠুভাবে হোক।’