বিচার ব্যবস্থা সংশোধনের পরিকল্পনা থেকে পিছু হটেছেন ইহুদিবাদী ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। এ মাসের শুরুতে সুপ্রিম কোর্টের ওপর সংসদকে আরও ক্ষমতা দেওয়ার দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি। কিন্তু এ বিষয়টি সাধারণভাবে নেয়নি সাধারণ ইসরায়েলিরা। তারা টানা কয়েকদিন এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন।
আর এমন বিক্ষোভের মুখে বিচার ব্যবস্থা সংশোধনের পরিকল্পনা স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। সোমবার রাতে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের জনগণের মধ্যে ফাটল আটকাতে’ এ পরিকল্পনা স্থগিত করা হয়েছে।
তার এ ঘোষণার পর রাস্তা থেকে সরে যান বিক্ষোভকারীরা। তবে এখন প্রশ্ন উঠেছে, বিক্ষোভকারীদের শান্ত করার জন্য নেতানিয়াহু ‘সাময়িক সময়ের জন্য’ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিনা।
বর্তমান সরকারের এ বিতর্কিত সিদ্ধান্তের বিরদ্ধে একত্রিত হন ইসরায়েলে সব মানুষ। গত দুই দিন তাদের মধ্যে অভূতপূর্ব একতা দেখা যায়। সোমবার ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় ট্রেড ইউনিয়ন ধর্মঘটের ঘোষণা দেয়।
প্রধান বিমানবন্দর থেকে শুরু করে দোকান, ব্যাংক— এমনকি হাসপাতালের সেবা পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায়। তাদের এক হওয়ার একটাই কারণ ছিল— প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে নতুন এ সংশোধনের পরিকল্পনা থেকে সরে যেতে বাধ্য করা। আগামী সপ্তাহে এটি সংসদে তোলার কথা ছিল তার।
ইসরায়েলের ইতিহাসে বর্তমানে ক্ষমতায় রয়েছে সবচেয়ে উগ্রডানপন্থি সরকার। ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্টের যে কমিটি বিচারক নিয়োগ দেয়, তাদের ওপর কর্তৃত্ব স্থাপনের উদ্দেশ্যে বিতর্কিত সংস্কার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। যদি এটি আইন হিসেবে পাস হতো তাহলে— চাইলেই সুপ্রিম কোর্টের রায় বাতিল করে দিতে পারত সংসদ। এছাড়া আইনটি পাস হলে সুপ্রিম কোর্ট কখনো প্রধানমন্ত্রীকে আনফিট বলা অথবা ক্ষমতাচ্যুত করতে পারত না।
নেতানিয়াহু দাবি করেছিলেন, এ আইনটি হলে বিচারকদের ক্ষমতার অপব্যবহার বন্ধ হতো। কিন্তু সমালোচকদের দাবি, নিজের বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ যেসব মামলা রয়েছে সেগুলো থেকে বাঁচতে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এমন বিতর্কিত পরিকল্পনা করেছিলেন।
এদিকে নেতানিয়াহু সোমবার এই আইন পাসের কার্যক্রম স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু বিরোধীদল ও বিক্ষোভকারীরা দাবি করেছেন, এ পরিকল্পনা পুরোপুরি বাদ দিতে হবে।
সূত্র: বিবিসি