ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান হলেই কেবল ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেবে সৌদি আরব

সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ বলেছেন, ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধানের শর্তে তার দেশ ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিতে পারে। চলমান ফিলিস্তিনি সংঘাতের সমাধানের পর বৃহত্তর চুক্তির অংশ হিসেবে সৌদি আরব ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিতে পারে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওই মন্তব্য করেন। খবর ভয়েস অব আমেরিকা।

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের একটি প্যানেল আলোচনায় সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা স্বীকার করি এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ইসরায়েলকেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কিন্তু সেক্ষেত্রে একটিই মাত্র উপায়। আর তা হলো, একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের শান্তি নিশ্চিত করা। সে সময় সৌদি আরব ইসরায়েলকে বৃহত্তর রাজনৈতিক চুক্তির অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবশ্যই।

প্রিন্স ফয়সাল আরও বলেন, একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠমের মাধ্যমে আঞ্চলিক শান্তি নিশ্চিত করা সম্ভব। এমন কিছুর জন্য আমরা এরই মধ্যে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করছি। গাজার বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিষয়টি আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠবে।

প্রিন্স ফয়সাল বলেন, এ অঞ্চলের জন্য, ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের জন্য একটি অনেক ভালো ভবিষ্যতের পথ রয়েছে, সেটি হল শান্তি। আমরা তার জন্য সম্পূর্ণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ জন্য সব পক্ষের শান্তির প্রচেষ্টার একটি সূচনা বিন্দু থাকা উচিত, যা কেবল ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি ন্যায়বিচারের মাধ্যমে ঘটতে পারে।

তবে ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থী সরকার সৌদি আরবের সাথে যেকোনো সম্ভাব্য স্বাভাবিকীকরণ চুক্তির অংশ হিসেবে ফিলিস্তিনিদের উল্লেখযোগ্য ছাড় দেওয়ার সম্ভাবনাকে নাকচ করে দিয়েছে।

উল্লেখ্য, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর আগে ইসরায়েল-সৌদি সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। তবে গাজায় ইসরায়েলের নৃশংস হামলায় সে পরিকল্পনা স্থগিত হয়ে যায়। এখন সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কথায় নতুন করে সেই আভাস পাওয়া গেল। তবে এ বিষয়টিকে অনেকেই এ মুহূর্তে উচ্চাভিলাষী বলে আখ্যা দিচ্ছেন। কারণ তিন মাসের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও ইসরায়েল ও হামাসের যুদ্ধ থামার কোনো নামগন্ধ পাওয়া যাচ্ছে না।

এর আগে ইসরায়েল সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন এবং মরক্কোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে। তবে সৌদি আরবের স্বীকৃতি পেলে তা হবে ইসরায়েলের জন্য সবচেয়ে বড় পুরস্কার। কারণ সৌদি আরব মধ্যপ্রাচ্যসহ পুরো বিশ্বে প্রভাবশালী দেশ। ইসলামের সবচেয়ে পবিত্র স্থানগুলো সেখানে থাকায় পুরো মুসলিম বিশ্বে সৌদি আরবের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে।