মাত্রাতিরিক্ত পানির ব্যবহার এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পানি সঙ্কটের ‘আসন্ন ঝুঁকি’ সম্পর্কে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। এক প্রতিবেদনে তারা বলেছে, ‘ভ্যাম্পায়ারের মতো পানির ব্যবহার এবং লাগামহীন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের’ জেরে বিশ্ব এখন ‘অন্ধভাবে এক বিপজ্জনক পথে হাঁটছে’।
গত চার দশকের মধ্যে পানি নিয়ে জাতিসংঘের প্রথম কোন গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনের আগে এই রিপোর্টটি প্রকাশ করা হয়েছে। বুধবার থেকে নিউইয়র্কে এ সম্মেলন শুরু হচ্ছে। তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলনে হাজার হাজার প্রতিনিধি অংশ নেবেন বলে মনে করা হচ্ছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলছেন, টেকসই নয় এমনভাবে পানির ব্যবহার, দূষণ এবং লাগামহীন উষ্ণায়ণের জেরে পানি, যা কিনা ‘বিশ্ব মানবতার প্রাণশক্তি,’ তা দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে।
ইউএন ওয়াটার অ্যান্ড ইউনেস্কোর প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত ব্যবহার এবং দূষণের কারণে পানির “দুষ্প্রাপ্যতা প্রকট হয়ে উঠছে।” অন্যদিকে, বিশ্বের উষ্ণায়ণের ফলে যেখানে প্রচুর পানি পাওয়া যায় এবং যেখানে পানি সঙ্কট রয়েছে, এই দুই জায়গাতেই কোন কোন মৌসুমে পানির ঘাটতি বেড়ে যাবে। প্রতিবেদনটি প্রধান রচয়িতা রিচার্ড কনর বলছেন, বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ১০% ‘বর্তমানে এমন এলাকায় বসবাস করে যেখানে জলের চাহিদা খুব উঁচু কিংবা জল সঙ্কটের চাপ প্রবল।’ ‘আমাদের প্রতিবেদনে আমরা বলেছি যে বিশ্বের সাড়ে ৩০০ কোটি মানুষ এখন বছরে অন্তত এক মাস পানির ঘাটতির মধ্যে থাকেন,’ তিনি বিবিসিকে বলেন।
আইপিসিসি বিশেষজ্ঞ প্যানেল সোমবার জাতিসংঘের যে সাম্প্রতিকতম জলবায়ু প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে সেই প্রতিবেদন জানাচ্ছে, “বর্তমানে বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক মানুষ বছরের অন্তত কোন একটি সময়ে পানির তীব্র সঙ্কটের মুখোমুখি হন।” কনর সাংবাদিকদের বলেন, বিশ্বব্যাপী জল সরবরাহের ক্ষেত্রে এখন “অনিশ্চয়তা বেড়ে যাচ্ছে।” “আমরা যদি এটির সমাধান না করি তবে অবশ্যই বিশ্বব্যাপী সংকট দেখা দেবে,” তিনি বলেন।
জাতিসংঘের উপ মহাসচিব উষা রাও মোনারি, যিনি জাতিসংঘের এই জল সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক আয়োজক, তিনি বিবিসিকে বলেছেন যে ভবিষ্যতে আরও যত্ন নিয়ে পানি সম্পদকে ব্যবহার করার প্রয়োজন হবে। তিনি বলেন, ‘গত কয়েক দশক ধরে আমরা (এই সম্পদ) যেভাবে ব্যবহার করেছি সেটিকে আরও কার্যকরভাবে পরিচালনা করলে বিশ্বে পর্যাপ্ত পানি থাকবে।’ সূত্র: বিবিসি