বাদশাহ ফয়সাল পুরস্কার ২০২৪-এর মনোনীতদের নাম ঘোষণা

মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানিত পুরস্কার ‘কিং ফয়সাল প্রাইজ’ বা বাদশাহ ফয়সাল পুরস্কারের জন্য মনোনীত ব্যক্তিদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এ বছর চিকিৎসা, বিজ্ঞান, ইসলামের সেবা, ইসলাম শিক্ষা-এই চার ক্যাটাগরিতে চার ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। বুধবার (১০ জানুয়ারি) দীর্ঘ পর্যালোচনার পর প্রিন্স তুর্কি আল-ফয়সাল মনোনীতদের নাম ঘোষণা করেন। খবর আরব নিউজ।

জানা গেছে, এ বছর ইসলাম শিক্ষা বিভাগে পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাভালন ফাউন্ডেশনের অধ্যাপক ওয়ায়েল হাল্লাক। ‘ইসলামি আইন ও এর সমসাময়িক প্রয়োগ’ শীর্ষক গবেষণার জন্য তিনি বিশ্বজুড়ে সমাদৃত।

ইসলামের সেবা বিভাগে যৌথভাবে মনোনীত হয়েছে দ্য জাপান মুসলিম অ্যাসোসিয়েশন এবং লেবানিজ গ্র্যান্ড মুফতির উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ সাম্মাক।

মেডিসিন বিভাগে এবারের পুরস্কারের বিষয় ছিল ‘পেরিফেরাল অক্ষমতার ব্যবস্থাপনা।’ এ বিভাগে এবার অধ্যাপক জেরি মেন্ডেলকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। মেরুদণ্ডের পেশীবহুল অ্যাট্রোফি (এসএমএ), ডুচেন মাসকুলার ডিস্ট্রোফি (ডিএমডি), এবং লিম্ব গার্ডেল পেশীবহুল ডিস্ট্রোফিতে আক্রান্ত রোগীদের স্ক্রিনিং, প্রাথমিক রোগ নির্ণয় এবং নিউরোমাসকুলার ডিসঅর্ডারগুলোর চিকিৎসার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী অবদানের জন্য তাকে এ মনোনয়ন দেওয়া হয়।

এই বছরের বিজ্ঞান বিভাগের পুরস্কারের ক্ষেত্রে বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ‘জিন নিয়ন্ত্রণ এবং কার্যকারিতায় নন-কোডিং আরএনএ-এর অন্তর্নিহিত ভূমিকা উন্মোচন’। এ বিভাগে পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্সার গবেষণা কেন্দ্রের অধ্যাপক হাওয়ার্ড ইউয়ান-হাও চ্যাং। নন-কোডিং আরএনএ-এর অন্তর্নিহিত ভূমিকা উন্মোচন এবং ডিএনএ নিয়ন্ত্রক অঞ্চলগুলি সনাক্তকারী জিনোম-বিস্তৃত পদ্ধতির অগ্রগতির জন্য চ্যাংকে এবারের মনোনয়ন দেওয়া হয়।

এ বছর আরবি ভাষা ও সাহিত্য ক্যাটাগরির বিষয়বস্তু ছিল ‘আরবি ভাষার প্রচারে অনারব প্রতিষ্ঠান ও তাদের প্রচেষ্টা। তবে এবার কাঙ্ক্ষিত সব মানদণ্ড পূরণ না হওয়ায় এ বিভাগে কাউকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়নি।

বিশ্বের নানা প্রান্তের গুণী মুসলিম ব্যক্তিত্বদের সম্মাননা দিতে ১৯৭৭ সালে কিং ফয়সাল ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭৯ সাল থেকে সংস্থাটি মুসলিম বিশে^র নোবেলখ্যাত ‘কিং ফয়সাল প্রাইজ’ প্রদান কার্যক্রম শুরু করে। প্রথম বছর ইসলামের সেবা, ইসলাম শিক্ষা ও আরবি সাহিত্য-এই তিনটি বিভাগে পুরস্কার দেওয়া হয়। ১৯৮১ সালে মেডিসিন ও বিজ্ঞান বিভাগকেও পুরস্কারের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। গত ৪৫ বছরে ৪৫টি দেশের ২৯০ জনকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। পুরস্কারজয়ীদের হাতে দুই লাখ মার্কিন ডলার, ২০০ গ্রাম ওজনের ২৪ ক্যারেটের স্বর্ণপদক, একটি প্রশংসাপত্র এবং পুরস্কারযোগ্য কাজের সারমর্ম তুলে দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, কিং ফয়সাল প্রাইজ পাওয়া অনেক ব্যক্তিত্ব পরে নোবেল পুরস্কার লাভ করেছেন।