বিজয় দিবসে ছাত্র জমিয়ত ঢাকা মহানগর পশ্চিমের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

পয়গাম ডেস্ক:

আগডেট:১৬ ডিসেম্বর ২২

ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর পশ্চিম কতৃক আয়োজিত ১৬ই ডিসেম্বর শুক্রবার সকাল ৮ টায় মিরপুরস্থ জমিয়ত মিলনায়তনে মহানগর পশ্চিমের সভাপতি মুহাম্মদ যোবায়েরের সভাপতিত্বে ও  ইনআমুল হাসান নাঈমের সঞ্চালনায় “স্বাধীনতার লক্ষ্য ও মুক্তির সংগ্রামে বিজয়: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহ-প্রচার সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব মাওলানা নূর মোহাম্মদ কাসেমী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, যুব জমিয়ত বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি, জমিয়ত উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা শারফুদ্দীন ইয়াহইয়া কাসেমী। বিশেষ অতিথি অবিভক্ত ঢাকা মহানগরীর সাবেক সাহিত্য সম্পাদক, খন্দকার ফখরুদ্দীন হুসাইনী।

প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি, ছাত্রনেতা আহমাদুল হক উমামা, বিশেষ বক্তা ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ছাত্রনেতা হাফেজ কাউসার আহমদ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা নূর মোহাম্মদ কাসেমী বলেন ইংরেজ বেনিয়াদের হাত থেকে উপমহাদেশসহ বাংলাদেশের বিজয়ে অর্জনে উলামায়ে কেরামের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। কিন্তু সে বিষয়ে তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা কোন আলোচনা করেনা। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন-একটি জমির পরচা হিসাবের ক্ষেত্রে  আর-এস, সি-এস ও বি-এস খতিয়ান যেমন প্রয়োজন হয়, ঠিক তেমনিভাবে ১৯৭১-এর স্বাধীনতার পূর্বের ১৯৪৭ সহ প্রতিটি বিজয়ের সঠিক ইতিহাস জানা জরুরি। কেননা প্রতিটি স্বাধীনতা সংগ্রামে উলামায়ে কেরামের অবদান ছিল অপরিহার্য। কিন্তু সেই ইতিহাস আজ আমাদের অগোচরে। তিনি আরো বলেন, উপমহাদেশের স্বাধীনতা অর্জনসহ প্রতিটি  বিজয়ের সঠিক ইতিহাস জানতে আমাদের আকাবিরদের বই-পুস্তক ও তাদের সংগ্রামী জীবনি মুতায়ালা করা অবশ্যক। এবং  প্রকৃত ইতিহাসের বই বেশি বেশি পাঠ করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা শারফুদ্দীন ইয়াহইয়া কাসেমী বলেন একদল লোক বলে- এদেশের বিজয়ে আলেমদের কোন ভূমিকা নেই। তারা সবসময় দাড়ি টুপিকে রাজাকারের পোশাক বানিয়ে এ দেশের প্রকৃত দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধা আলেম সমাজকে কলঙ্কিত করতে চায়।  মূলত তাদের বিজয়ের ইতিহাস সম্পর্কে জানাই নেই। তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের  জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সাধারণ সম্পাদক মুফতি মাহমুদ সাহেব স্বাধীনতা যুদ্ধের পূর্বে বাংলাদেশে এসে জমিয়তের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন উলামায়ে কেরামের সাথে বৈঠকে বসেন। বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে তিনি বলেন, আমার মনে হচ এই সফরি আমার শেষ সফর পূর্ব পাকিস্তানে
এরপর থেকে আসলে ভিসা নিয়ে আসতে হবে। পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন হবে।  পূর্ব পাকিস্তানের উলামায়ে কেরামের উচিত, তারা যেনো একটি প্ল্যাটফর্মে এসে দেশের স্বাধীনতার জন্য কাজ করে।

তিনি আরো বলেন, যুদ্ধ পূর্ববর্তী সময়ে বাংলাদেশের যে কোন জাতীয় প্রয়োজনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও দেশের জাতীয় নেতারা জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম -এর নেতৃবৃন্দের বৈঠকে বসতেন। বিশেষ করে তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শামছুদ্দীন কাসেমী রহ. ও  মাওলানা মুহিউদ্দিন খান রহ.-এর সাথে। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম তাদের দলীয় পেডে রেজুলেশন করে দেশের জনসাধারণকে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণের আহ্বান জানায়। অতএব  জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের ইতিহাসকে বাদ দিয়ে স্বাধীনতার ইতিহাস হতে পারে না।

প্রধান বক্তার ছাত্র জমিয়তের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি আহমাদুল হক উমামা তার বক্তব্যে জমিয়তের সামাজিক, রাজনৈতিক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অবদান তুলে ধরেন। এবং সকলকে আগামী দিনে দেশ ও জাতীর কল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানান। পাশাপাশি আগামী ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের দাওয়াত প্রদান করেন। এবং সকল দায়িত্বশীলের উপস্থিতি কামনা করেন।

এছাড়াও আরো বক্তব্য রাখেন ছাত্র জমিয়ত আরজাবাদ ক্যাম্পাস শাখার সাধারণ সম্পাদক আহমদ আল গাজী,  প্রচার সম্পাদক তকি মাহমুদ, ঢাকা মহানগর পশ্চিমের অর্থ সম্পাদক আরিফ বিল্লাহ  , প্রশিক্ষণ সম্পাদক মুহাম্মদ সালমান।

আরো উপস্থিত ছিলেন, ছাত্র জমিয়ত ঢাকা মহানগর পশ্চিমের কলেজ ভার্সিটি বিষয়ক সম্পাদক জোবায়ের আহমদ, নির্বাহী সদস্য মুহাম্মদ হাসনাইন ও মাহমুদুল হাসান মিরাজ , পল্লবী থানার প্রশিক্ষণ সম্পাদক মহিউদ্দিন, কলেজ ভার্সিটি বিষয়ক সম্পাদক আতাউল্লাহ প্রমূখ।