অনলাইন ডেস্ক:
আমদানিকৃত পণ্যের মূল্য পরিশোধের জন্য বিদেশের বিভিন্ন ব্যাংকে নিজেদের অ্যাকাউন্টে ডলার রাখে দেশী ব্যাংকগুলো। রপ্তানিকৃত পণ্যের মূল্য ও রেমিট্যান্সের অর্থও ব্যাংকের এসব বিদেশি অ্যাকাউন্টে জমা হয়। বাংলাদেশি ব্যাংকগুলোর এমন বিদেশি বা নস্ট্রো অ্যাকাউন্টের বেশিরভাগ হলো যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে। গত এক বছরে দেশ দুটির আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশি ব্যাংকগুলোর নস্ট্রো অ্যাকাউন্টে ডলারের পরিমাণ প্রায় অর্ধেকে নেমেছে।
মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল স্ট্যাটিসটিকস শীর্ষক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশের ব্যাংক ও নাগরিকের জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ছিল ৬ দশমিক ৬ বিলিয়ন (৬৬৬ কোটি) ডলার। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে এর পরিমাণ কমে হয় ৩ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন (৩৩৩ কোটি) ডলার। অর্থাৎ, নয় মাসের ব্যবধানে যুক্তরাষ্ট্রে গচ্ছিত ডলারের পরিমাণ অর্ধেক কমে গেছে।
একইভাবে, যুক্তরাজ্যের ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের তথ্যে দেখা যায়, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে সেখানকার ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশি ব্যাংক ও ব্যক্তির অ্যাকাউন্টের স্থিতি ছিল ২ দশমিক ২ বিলিয়ন (২২২ কোটি) ডলার। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে এর পরিমাণ নেমে আসে ১ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন (১৪৩ কোটি) ডলারে। এরমধ্যে ১৩২ কোটি ডলার বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংকের, বাকি অর্থ বাংলাদেশি নাগরিকদের অ্যাকাউন্টে জমা ছিল।
বেশ কিছুদিন ধরে ডলার সংকটের কারণে আমদানি দায় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশি ব্যাংকগুলো। একই কারণে বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধেও সমস্যা হচ্ছে। দেশে ডলার সংকটের প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের ব্যাংকে বাংলাদেশি ব্যাংকগুলোর ডলারের স্থিতি কমেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো রেগুলেটরি ক্যাপিটালের ১৫ শতাংশের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা নিজেদের কাছে রাখতে পারে। কোনো ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার পরিমাণ এর চেয়ে বেশি হলে তা কেন্দ্রীয় ব্যাংক অথবা অন্য ব্যাংকের কাছে বিক্রি করতে হয়। তবে এক্ষেত্রে বেশিরভাগ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার নেট ওপেন পজিশন (এনওপি) বেশ কয়েক মাস ধরে নেতিবাচক ধারায় রয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়।