বৃহত্তর ও সুগঠিত ঐক্যের জন্য জমিয়ত কে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করতে হবে

-ইউকে জমিয়তের অভিষেক অনুষ্ঠানে বক্তাগন

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকের অভিষেক অনুষ্ঠান গত২২ নভেম্বর বুধবার পূর্ব লন্ডনের আল খায়ের কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত হয়।অভিষেক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নবনির্বাচিত সভাপতি মাওলানা শুয়াইব আহমদ।অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন নব নির্বাচিত সেক্রেটারী মাওলানা সৈয়দ নাঈম আহমদ।নবগঠিত ইউকে জমিয়তের দায়িত্বশীলদের নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেন ইউকে জমিয়তের সিনিয়র সহ-সভাপতি মুফতি আবদুল মুনতাকিম।

উপদেষ্টাগন সহ মোট ১০১সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটিতে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন যথারীতি আধ্যাত্মিক রাহবার মাওলানা শায়খ আসগর হুসাইন। ইউকে জমিয়তের সভাপতি পদে পুনরায় দায়িত্ব পেয়েছেন মারকাজুল উলূম লন্ডন এর প্রিন্সিপাল মাওলানা শুয়াইব আহমদ। সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে পূর্বের ন্যায় বহাল রয়েছেন বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মাওলানা মুফতী আবদুল মুনতাকিম। নতুন জেনারেল সেক্রেটারী নিযুক্ত হয়েছেন বিশিষ্ট সংগঠক আলেমেদ্বীন মাওলানা সৈয়দ নাঈম আহমদ। সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন মাওলানা শামছুল আলম। নতুন ট্রেজারার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন হাফিজ রশীদ আহমদ।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকের অভিষেক অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকের সহ-সভাপতি ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা সৈয়দ তামীম আহমদ,জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকের সহ-সভাপতি এবং জামেয়া মাদানিয়া বিশ্বনাথ মাদ্রাসার সহকারী পরিচালক হাফিজ হোসাইন আহমদ বিশ্বনাথী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকের জয়েন্ট সেক্রেটারি ও টাওয়ার হ্যামলেটস শাখার সভাপতি হাফিজ মাওলানা মোঃ ইলিয়াস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকের জয়েন্ট সেক্রেটারি ও আল ইহসান একাডেমী লেস্টারের পরিচালক মাওলানা হিফজুল করীম মাশুক, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকের ট্রেজারার হাফিজ রশিদ আহমদ।


এছাড়াও ইউকে জমিয়তের বিভিন্ন শাখার দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন যথাক্রমে-জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকের উপদেষ্টা মাওলানা সাঈদ আলী, ইউকে জমিয়তের উপদেষ্টা আলহাজ্ব খালিছ মিয়া,জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকের সহ সেক্রেটারি মুফতি সৈয়দ রিয়াজ আহমদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা নাজমুল হাসান, ইউকে জমিয়তের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউ কে ওয়েস্ট লন্ডন শাখার সভাপতি হাফিজ মাওলানা মিজানুর রহমান, ইউকে জমিয়তের তাফসীরুল কোরআন বিষয়ক সম্পাদক হাফেজ মাওলানা মুস্তাক আহমদ,লন্ডন ভিক্টোরিয়া মসজিদের খতিব হাফিজ মাওলানা আব্দুল হক, ইউকে জমিয়তের প্রচার সম্পাদক ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকে ওয়েস্ট লন্ডন শাখার সেক্রেটারি মাওলানা শামসুল ইসলাম, ইউকে জমিয়তের সহ সেক্রেটারি ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম নিউহাম শাখার সভাপতি হাফিজ জিয়া উদ্দিন, ইউকে জমিয়তের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও নিউহাম শাখার সহ-সভাপতি মাওলানা মঈন উদ্দিন খান,ইউকে জমিয়তের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিজ মিফতাহুর রহমান, লন্ডন মহানগর জমিয়তের সহ-সভাপতি হাফিজ গিয়াস উদ্দিন,ইউকে জমিয়তের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হাফিজ মাওলানা খালেদ,ইউকে জমিয়ত টাওয়ার হ্যামলেট শাখার সহ-সভাপতি সাইফুর রহমান,ইউকে জমিয়তের মিডিয়া সেক্রেটারি ও হেকনী শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, ওয়েস্ট লন্ডন জমিয়তের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা জুবায়ের উদ্দিন রায়হান প্রমুখ।

সভায় বক্তাগন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম কে শতাব্দীর প্রাচীনতম ইসলামী সংগঠন আখ্যায়িত করে এ-কে অনুসরণীয় পূর্বসূরীদের রেখে যাওয়া আমানত হিসেবে সবাইকে গ্রহণ করার আহ্বান জানান।
বক্তাগণ বলেন বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা ও যোগোপযোগী কর্ম প্রয়াসের মাধ্যমে জমিয়তে উলামার দাওয়াত সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়া সময়ের গুরুত্বপূর্ণ দাবি। জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রজ্ঞাবান কর্মীদের গভীর অনুভূতির সাথে উপলব্ধি করতে হবে যে গণস্তরে অত্যন্ত সুস্থির, প্রবল ও বহুমাত্রিক শক্তি সঞ্চয় করা জমিয়তের জন্য সাফল্যের সোপান। বৃহত্তর ও সুগঠিত ঐক্যের জন্য জমিয়ত কে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করতে হবে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে, প্রশাসনের বলয়ে এবং কূটনীতির ময়দানে পরিস্থিতিকে আনুকূল্যে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে গতিশীল ভূমিকা পালনের জন্য দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি হাতে নেয়া জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের বড় দায়িত্ব। সময়ের এসব অনিবার্য দাবি পূরণের জন্য জমিয়তের কার্যক্রম সর্বত্র গতিশীল করার কোন বিকল্প নেই।

নেতৃবৃন্দ বলেন, দ্বীনে ইসলামের হেফাজত ও সংরক্ষণ আল্লাহ তায়ালা জীবন্ত ব্যক্তিত্বদের দ্বারাই করেছেন। এ মর্মে আমরা সবাই অবগত যে, হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সময় থেকে অদ্যাবধি দ্বীনে ইসলামের হেফাজত কল্পে আল্লাহ তা’লা যুগে যুগে যে সব মহান ব্যক্তিত্বদেরকে নির্বাচিত করেছেন, তাদের সাথে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের অবিচ্ছিন্ন যোগসূত্র অত্যন্ত মজবুতভাবে প্রতিষ্ঠিত।
ইসলামী ইতিহাসের সর্বজন মান্য এসব “আকাবির ও আসলাফ” এর সাথে জমিয়তে’র অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক এমন এক ঐতিহাসিক বাস্তবতা, যা অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই। অন্যকথায় ইসলাম রক্ষার জন্য যে ধারাবাহিক চেষ্টা শুরু থেকে অব্যাহত রয়েছে তা থেকে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামকে পৃথক চোখে দেখার কোন উপায় নেই। সমগ্র উপমহাদেশে ইলমী, আমলী, দাওয়াতী এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক বর্তমান রূপ যে সব সংগ্রামী উলামায়ে কেরামের অক্লান্ত মেহনত ও পরিশ্রমের স্বর্ণালী ফসল, তাঁরা সকলেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জমিয়তে’রই সাথে সম্পর্কিত।
এরই ফলশ্রুতিতে আমরা দেখতে পাই যে ভারত বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম” নামে’র মধ্য যে প্রভাব ও গ্রহণযোগ্যতা বিস্তৃত রয়েছে, তা অন্য কোথাও চিন্তা করা যায় না। এমন একটি বৃহত্তর, ঐতিহাসিক এবং আকাবির ও আস্লাফের “আমানত” সংগঠনের ছায়াতলে অবস্থান করে সময়োপযোগী বহুমুখি দ্বীনি কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া টাই যে বর্তমান সময়ের দাবি তা আশা করি বিস্তারিত বলার অপেক্ষা রাখে না।

ইউকে জমিয়ত নেতৃবৃন্দ বলেন,বর্তমানে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ধর্মীয়, রাজনৈতিক, দাওয়াতী, সামাজিক, বুদ্ধিবৃত্তিক এবং সত্য ন্যায়ের বহুমুখী সংগ্রামে, বিশ্বব্যাপী অনন্য সাধারণ খেদমতের প্রেক্ষাপটে তার শত বছর পূরণের গৌরবোজ্জল অধ্যায় রচণা করেছে। এজন্য আমরা অত্যন্ত বিনয়ের সাথে এ গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক যুগ সন্ধিক্ষণে ইউকে জমিয়তের সাথে একাকার হয়ে কাজ করে যাওয়ার জন্য আপনাদের প্রতি বিশেষভাবে আশাবাদ ব্যক্ত করছি।