ভোট চোরকে এ দেশের মানুষ কখনো গ্রহণ করে না: প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক:

‘এ দেশে কেউ যদি ভোট চুরি করে ক্ষমতায় আসে, জনগণ তা মেনে নেয় না, মেনে নেয়নি। ১৯৯৬ সালে খালেদা জিয়া ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছিল। জনগণ তা মেনে নেয়নি। আন্দোলন করে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল। ভোট চোরকে জনগণ কখনো গ্রহণ করে না।

রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধারীর মিরপুর এলাকায় কালশী ফ্লাইওভারের উদ্বোধনের পর সুধী সমাবেশের ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।  

শেখ হাসিনা বলেন,গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত করে জনগণের ভাগ্য বদলানোই আওয়ামী লীগের লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটেই নির্বাচিত হয়ে আসছে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ ২০১৪ ও ২০১৮ সালে ক্ষমতায় এসেছে। ভোট চোরকে এ দেশের মানুষ কখনো গ্রহণ করে না।২০০৬ সালেও তারা অবৈধ ভোটার তৈরি করেছিল, জনগণ তাও মেনে নেয়নি। তাই বলছি, এ নিয়ে মানুষকে যতই বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হোক, এ দেশের মানুষকে কেউ বিভ্রান্ত করতে পারবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতু নিয়ে অনেক অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দুর্নীতির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আমি নিজের ভাগ্য নয়, দেশের মানুষের ভাগ্য গড়ার জন্য কাজ করতে এসেছি। দুর্নীতি করে অন্যের অর্থ লুট করবো—এমন শিক্ষা আমার বাবা-মা আমাকে দেইনি। শেষ পর্যন্ত পদ্মা সেতু নির্মাণ করে আমরা প্রমাণ করেছি আমরাই পারি। এ জন্য আমি বাংলাদেশের জনগণকে ধন্যবাদ জানাই। ’

তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণ করে  আমরা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছি, আমরা ইচ্ছা করলে পারি। আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারিনি, আর কেউ দাবায়ে রাখতে পারবেও না ইনশাল্লাহ। ’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে ১৯৮১ সালে জনগণের সমর্থন নিয়ে আমি আবার দেশে ফিরে আসি। ইনডেমনিটি দিয়ে আমার মা-বাবার হত্যার বিচার বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। তারপরও বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে গড়ে তুলতে এবং এ দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশে ফিরে আসি। আমাদের চেয়েছিলাম, বাংলাদেশকে নিয়ে যেন কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পরে। ’ 

তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় আসার আগে এ দেশের মানুষের কোনো আশা-ভরসা ছিল না। সেই জায়গা থেকে আমরা ১৯৯৬ সরকার গঠন করি। খাদ্য, শিক্ষা, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ ব্যবস্থা- সব ক্ষেত্রে আমরা উন্নত করি। নতুনভাবে বাবার পদঙ্ক অনুসরণ করে সড়ক ব্যবস্থা এগিয়ে নিয়ে যায়। যমুনা সেতু, ধরলা, করতোয়া সেতুসহ বহু সেতু নির্মাণ করি। পরে পদ্মা সেতু, কালনাসহ ১০০ সেতু, মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু টানেল, রাজধানীতে একাধিক ফ্লাইওভার, পাতাল রেলসহ বহু উন্নয়ন প্রকল্প নির্মাণ ও নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। দেশটা আমাদের- এ দেশে কী হবে আর কী হবে না তা আমরা ঠিক করবো। কে কোথা থেকে এসে কী বলবে সেই অনুযায়ী চলবে না। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেকটা গ্রামের মানুষ যাতে নাগরিক সুবিধা পায়, আমরা সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছি। একটি মানুষও যেন গৃহহীন ও ভূমিহীন না থাকে, এ জন্য আমরা মানুষকে জমিসহ পাকা বাড়ি করে দিচ্ছি। যারা এখনো গৃহহীন আছে, তাঁদের খুঁজে বের করা হচ্ছে। আমরা তাদের বাড়ি তৈরি করে দেব। ’
 
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আজকে আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিতে সক্ষম হয়েছি। করোনা ও যুদ্ধের মধ্যে বিশ্বে মন্দার পরও আমরা বিদ্যুতের ব্যবস্থা করছি। তবে বিদ্যুতে ভার্তুকি দেওয়া সম্ভব নয়। কেননা আমাদের খাদ্য আমদানি করতে হচ্ছে। এর জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় হচ্ছে। এক কোটি মানুষকে টিসিবির কার্ড দিচ্ছি। মাত্র ১৫ টাকা কেজিতে ৫০ লাখ মানুষকে চাল কেনার সুযোগ করে দিয়েছি। মানুষের যেন কষ্ট না হয় সেদিকে দৃষ্টি দিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ’